দীর্ঘদিন ধরেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বেশ কিছু সংখ্যক লোক সৌদি আরবে বসবাস করছে। গেল বছর সেপ্টেম্বরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, দেশটিতে বসবাসরত ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে সৌদি আরব। তবে সৌদির চাপে নমনীয়তা দেখায়নি ঢাকা। প্রায় এক বছর পরে এসেও সরকার বলছে, ‘আসল বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী’ সবাইকে ফেরত নিয়ে আসার বিষয়ে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে ভিন্ন জাতির কাউকে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) আছে এমন ব্যক্তিদের বাংলাদেশ তাদের নাগরিক হিসাবে মেনে নেবে, আর অন্যদের নয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সিদ্ধান্ত যেটি আছে সেটি হচ্ছে আমরা যাচাই-বাছাই করেই তাদের পাসপোর্ট দেবো (রিনিউ)। এক্ষেত্রে শুধু যাদের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) আছে তাদেরই আমরা যাচাই-বাছাই করবো।
এই রোহিঙ্গারা ৩০-৪০ বছর ধরে সৌদি আরবে অবস্থান করছে এবং এদের অনেককেই সৌদি আরবই নিয়ে গিয়েছিল বলে সেসময় (গেল বছর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন। এখন ‘ঢালাও ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দিচ্ছে বাংলাদেশ’ এমন তথ্য সঠিক নয় জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, হাতে লেখা পাসপোর্ট বা অন্য কোনও কিছু থাকলে সেক্ষেত্রে আমাদের কোনও দায়দায়িত্ব নেই। মেশিন রিডেবল একটি নতুন সিস্টেম এবং সেক্ষেত্রে আমাদের যাচাই-বাছাই করার একটি বিষয় আছে বলে তিনি জানান।
এত সংখ্যক লোকের মধ্যে এমআরপি আছে এমন লোক আছে খুবই কম বলে জানান মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, ‘সেই সংখ্যাটি খুবই কম, এখন পর্যন্ত ১০০ বা ২০০-এর মতো রয়েছে। বিভিন্নজন বলছেন অনেক আছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা এই সংখ্যকই খুঁজে পেয়েছি।’
তবে বাস্তবে যতটা দেখা যাচ্ছে সমস্যাটি তার থেকে অনেক বেশি জটিল উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, ‘এমন কিছু ঘটনা আছে যেখানে বাংলাদেশিরাই রোহিঙ্গা সেজে বসে আছে। কারণ রোহিঙ্গা পরিচয়ে সৌদি আরবে বাড়তি কিছু সুবিধা পাওয়া যায়।
এদিকে দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘অন্যান্যদের মতো আমরাও আসিয়ানের উদ্যোগের উপর কিছুটা অপেক্ষা করছি।’ মিয়ানমার বিষয়ে আসিয়ানের দূত নিযুক্ত হওয়ার পরে আরও একটি ফ্রন্ট খোলা হবে বলেও জানান তিনি।
পাঠকের মতামত