কোরবানীর দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই জমে উঠেছে পশুর হাট। গত ২ বছর ধরে পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার ও ভারত থেকে গবাদী পশু আমদানি না হওয়ার কারণে স্থানীয় কৃষক ও খামারীরা গবাদি পশু পালনে উৎসাহী হয়ে উঠেছে। তারা মনে করছে কষ্ট করে পশু লালন পালন করলে কোরবানির হাটে ভাল দাম পাওয়া যাবে। তাই কোরবানির হাটে দেশী গরুর ভীড় লক্ষনীয়। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, কোরবানির পশুর হাটে দালাল ফড়িয়াদের অসহনীয় উৎপাতের কারণে গত বছরের তুলনায় গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে দ্বিগুন। গত মঙ্গলবার ও বুধবার উখিয়া গরুর বাজারে ৪ মন ওজনের একটি গরু বিক্রি হয়েছে এক লক্ষ টাকায়। অথচ একই ধরনের গরু গত কোরবানির বাজারে বিক্রি হয়েছে ৭০ হাজার টাকায়। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উখিয়া সদর, মরিচ্যা বাজারসহ ২টি বাজার গবাদি পশুর হাট হিসাবে নির্ধারিত থাকলেও জনস্বার্থে পালংখালী, থাইংখালী, বালুখালী, কুতুপালং, রুমখাঁবাজার ও সোনারপাড়াবাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে পশুর বাজার বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গরু বেপারী আবদুল করিম, আবদুল মাজেদ, শাহ জাহান বলেন, এ বারে এখনো পর্যন্ত কোন মিয়ানমারের গরু আসেনি। উখিয়া উপ-প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আবুল কাশেম বলেন, উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিক ভাবে ১৪৪টি খামারে পশু লালন পালন হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রায় ১০ হাজার গবাদি পশু এবার কোরবানির হাটে বাজার জাতের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিটি কৃষকের বাড়ীতে ২/৩টি করে পশু পালন হচ্ছে কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য। যে কারণে এখানে পশুর কোন ঘাটতি হবে না। গত মঙ্গলবার ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলার ব্যস্ততম পশুরহাট উখিয়া গরু বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ২ হাজারেও অধিক গরু, মহিষ, ছাগল বাজারে এসেছে। তবে গরু মহিষের অত্যাধিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে ক্রেতারা পশুর দরদাম করে না কিনে ফিরে যাচ্ছে। বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানান, সামনের বাজারে দাম আরও একটু কমতে পারে। বাজারে গরু ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাসেম জানায়, মিয়ানমার থেকে গরু না আসার কারণে দেশী গরুর দাম বেড়েছে। ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ দালাল ফড়িয়াদের অনৈতিক মধ্যস্থতার কারণে বাজারে গরুর দাম করছে না। উখিয়া দলিল লেখক সমিতির সভাপতি সৈয়দ কাশেম ভেন্ডার বলেন, এ বারে ৭৮ হাজার টাকা দামের একটি গরু কিনছি। কিন্তু গত বারের দাম একটু বেশি। তারপরেও কোরবানিত করতে হবে। গরু বাজার ঘুরে জানা যায়, আড়াই মন ওজনের একটি গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ৬৫/৭০ হাজার টাকা। তবে মাঝারি সাইজের গরুর দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকার কারণে ছোট গরু বিক্রি হচ্ছে বেশি। বাজার ইজারাদার নাজির হোসেন জানান, স্থানীয় ভাবে লালিত পালিত দেশী গরুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে আগের তুলনায় এ বছর গরু মহিষের দাম বেড়েছে। তবে মিয়ানমার থেকে গরু আসলে দাম একটু কমতে পারে। টেকনাফ কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে ২৪৬টি গরু, মহিষ, ছাগল আমদানি হয়েছে। আর গত মঙ্গলবার এসেছে ৫৮টি মহিষ। যা চাহিদার তুলনায় নগন্য। টেকনাফের গরু ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দ জানান, করিডোর দিয়ে আসা প্রতিটি গরুর দাম পড়েছে ৬০ হাজার টাকা। উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সাহাব উদ্দিন জানান, স্থানীয় ভাবে লালিত পালিত প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজা করা গরু দিয়ে এবার কোরবানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, প্রতিটি ওষুধের দোকানে গরু মোটা তাজা করণের ওষুধ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ খামারীদের প্রতিনিয়ত তদারকি করার কারণে এবার বিকল্প উপায়ে গরু মোটাতাজা করা অনেকেরই সম্ভব হয়নি বিধায় খড়কুড়া দিয়ে পালিত রিষ্ট পুষ্ট গরু বাজারে পাওয়া যাবে।
চট্টগ্রামে চকবাজার থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার হয়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন ...
পাঠকের মতামত