উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭/০১/২০২৫ ৯:৫২ এএম , আপডেট: ১৭/০১/২০২৫ ১০:০২ এএম

কক্সবাজারের বেসরকারি ইউনিয়ন হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে আরও এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত মরিয়ম জান্নাত ইমা (২২) রামুর খুনিয়া পালং ইউনিয়নের দারিয়ার দিঘী এলাকার ব্যবসায়ী নেওয়াজ শরীফের স্ত্রী। স্বজনদের দাবি, ত্রুটিপূর্ণ অপারেশনের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) কক্সবাজার শহরের ইউনিয়ন হাসপাতালে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

মরিয়মকে প্রথমে সি-সাইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ইউনিয়ন হাসপাতালে রেফার করা হয়। ইউনিয়ন হাসপাতালে একাধিক অপারেশনের পরও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মৃত্যু হয়।

মরিয়মের বড় ভাই ইমরান জানান, প্রসব বেদনা নিয়ে বুধবার সকাল ১০টায় ডা. ইফ্ফাত সানিয়ার তত্ত্বাবধানে সী সাইড হাসপাতালে ভর্তি হন মরিয়ম। বিকেল ৪টায় তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।

ইমরানের অভিযোগ, ডা. ইফ্ফাত অপারেশন সম্পূর্ণ না করেই নার্সকে সেলাই করতে বলে অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে যান। পরিস্থিতি খারাপ হলে মরিয়মকে ইউনিয়ন হাসপাতালে রেফার করা হয়, যেখানে তাকে ৮ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। রাত ৮টায় আরও একটি মেজর অপারেশন করা হয়। অপারেশন শেষে মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউতে রাখা হলেও স্বজনদের দেখতে দেওয়া হয়নি। সকালে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়।

এই প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঘটনায় স্বজনদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। মরিয়মের ভাই ইমরান হাসপাতালের ভুল চিকিৎসাকে মৃত্যুর কারণ বলে দাবি করলেও, মরিয়মের মামা আমিন ইউনিয়ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেছেন।

মরিয়মের চাচা কাজি আবু নাছের মিঠুও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

তিনি দাবি করেছেন যে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বজনদের রোগীর অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়নি এবং ভুল চিকিৎসার কারণে মরিয়মের মৃত্যু হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন।এই মতবিরোধের মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি এখনও স্পষ্ট নয়। মরিয়মের মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য বিস্তারিত তদন্তের প্রয়োজন।

ইউনিয়ন হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নুরুল হুদা জানান, আপত্তি থাকা সত্ত্বেও রোগীকে ডা. ইফ্ফাত সানিয়ার রেফারেন্সে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় ভর্তি করা হয়।হার্টবিট বেড়ে যাওয়া এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মরিয়মের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।তবে মূল অভিযুক্ত ডা. ইফ্ফাত সানিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদার জানান, ইউনিয়ন হাসপাতালের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এই হাসপাতালে। আজকের ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে একই হাসপাতালে আফসানা হোসেন শীলা নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। সেসময় ভুল চিকিৎসার কারণে প্রসূতির মৃত্যু হলে জনগণ হাসপাতাল ঘেরাও করে ভাঙচুরও চালায়। এছাড়া হাসপাতালের নারী কর্মীদের মধ্যরাতে জোরপূর্বক যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত ...

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করবেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

আগামী শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শনে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ...

কক্সবাজার জেলার নতুন পুলিশ সুপারের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন মোঃ সাইফউদ্দীন শাহীন

কক্সবাজার জেলার নবনিযুক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে যোগদান ও দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন মোঃ সাইফউদ্দীন শাহীন। ...

সাংবাদিককে ফাঁসাতে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের লাইভ নাটক, তদন্তের দাবিতে উত্তাল কক্সবাজার

কক্সবাজারে এক সাংবাদিককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (এডি) ...