সাইফুর রহিম শাহীন:
সাংবাদিকতা এক সময়ের জন্য (ক্ষেত্র বিশেষে এখনো) মহান পেশা হিসেবে আমজনতার কাছে সমাদৃত ছিলো। কিন্তু কালের পরিক্রমায় দিন দিন এই পেশার মানুষরা বিভিন্ন কারনে জনগণ তথা দর্শক-পাঠকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। কারণ এই পেশাকে কলুষিত করতে বিপদগামী কিছু মানুষ প্রবেশ করেছে। বেশকিছু যুবক যারা ইতোপূর্বে বিভিন্ন ফৌজদারি অপকর্মের সাথে জড়িতছিল তারা এখন হাল সময়ের তুখোড় সাংবাদিক বটে! তারা এই মহৎ পেশাকে যারপরনাই বিতর্কিত করে তুলছে। সাংবাদিক সমাজে বিভাজন, ত্রিভাজন সৃষ্টি করে এবং সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে এরা। তাদের অনেকে আবার বিভিন্ন সরকারী দপ্তর এমনকি থানা পুলিশের দালালীও করছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য নিজের নামও সঠিকভাবে বানান করে বলতে পারেননা, অথচ তারাও প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার এখন বড় সাংবাদিক! যাদের সাংবাদিকতার মতো মহৎ পেশা সম্পর্কে জ্ঞানের পরিধি স্বল্প তারা আবার সাংবাদিক নেতাও বটে! দেশের বেশকিছু জায়গার মতো কক্সবাজারেও এই অবস্থা চলছে। বিতর্কিত ব্যক্তিরা এই পেশায় প্রবেশের কারনে কক্সবাজার শহরে কর্মরত সাংবাদিকরা (সিনিয়র থেকে জুনিয়র) দারুণ ইমেজ সংকটে রয়েছে। বিপদগামীদের কারনে কক্সবাজারে কর্মরত সাংবাদিকরা এখন নিজেদের মধ্যে কাদাছোড়াছুড়ি করেন। জুনিয়ররা সিনিয়র সাংবাদিকদের সম্পর্কে কটুক্তি করতে দ্বিধা করেনা। তাছাড়া দলাদলি, একজন আরেকজনের কুৎসা রটনা, ব্যক্তিগত আক্রমণ ইত্যাদি কর্মযজ্ঞ এখন কক্সবাজারে কর্মরত সাংবাদিক সমাজের মাঝে বিদ্যমান। যা নিকট অতীতেও ছিলনা। প্রসঙ্গত: আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় কক্সবাজারে অনেক সাংবাদিক নিজেকে আওয়ামীলীগ নেতা বা আওয়ামীপন্থী সাংবাদিক হিসেবে জাহির করেন। একজন পেশাধার সাংবাদিকের জন্য এই বিষয়টা অবশ্যই আত্মঘাতি। এরকম অনেকে আছেন যারা সাংবাদিকতায় আওয়ামীলীগ দলীয় পরিচয় বহন করেন। অথচ তাদের পরিবার বিএনপি পরিবার। তবে এটা কোন অপরাধ নয়। তবে নিজের স্বার্থ ও ঘৃণ্য অভিরুচি হাসিল করার জন্য এই চর্চা অনৈতিক। এই শ্রেণীর সাংবাদিক আওয়ামীগীগের সাংবাদিক বলে লম্ফঝম্ফ করেন এবং অন্যকে অন্য দলের সাংবাদিক বলে ঘায়েলের অপচেষ্টা করেন যা খারাপ দৃষ্টান্ত। ঈশান কোন থেকে পয়দা হওয়া এসব তথাকথিত সাংবাদিকরাই কক্সবাজারের সাংবাদিক সমাজের ঐতিহ্য ও সম্মান ডুবাচ্ছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শ্রদ্ধাভাজন সাংবাদিকদেরও সময়ে অসময়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতা বলতেও কুণ্ঠাবোধ করেননা! মোদ্দাকথা, এসব অনৈতিক চর্চা পরিহার না করলে কক্সবাজারে সাংবাদিকতার মান অচীরেই তলানিতে পৌঁছে যাবে। সুশীল সমাজ ও সচেতন মহল তা-ই মনে করেন।
সম্পাদক, দৈনিক আমাদের কক্সবাজার।