ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৯/১১/২০২৪ ৮:২৪ এএম

কক্সবাজারের মহেশখালীতে অবস্থিত মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট এক মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর পুনরায় উৎপাদনে ফিরতে যাচ্ছে। বুধবার সকালে ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ৭০ হাজার টন কয়লা নিয়ে মাতারবাড়ী বন্দরে পৌঁছায়।

কর্তৃপক্ষ আশা করছে, কয়লার সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুনরায় শুরু করা যাবে।

কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, কয়লাবোঝাই জাহাজ থেকে খালাস শুরু হয়েছে। মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা এটি কয়লার প্রথম চালান। কয়লা খালাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুই ইউনিটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রোববার থেকেই পুনরায় চালু হবে।

তিনি আরও জানান, কয়লার সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহও দ্রুত স্বাভাবিক হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ অক্টোবর কয়লা সংকটের কারণে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দুই ইউনিটের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা সরবরাহের আগের চুক্তি আগস্টে শেষ হয়। নতুন কয়লা কেনার দরপত্র আহবানে বিলম্ব হওয়ায় কয়লার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয়।

জানা গেছে, তিন বছরের জন্য কয়লা সরবরাহের আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করা হলেও, সেই প্রক্রিয়া দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে জটিলতায় পড়ে। বসুন্ধরা, ইকুইন্টিয়া ও অথ্রো কনসোর্টিয়ামের অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্ট গত জুলাইয়ে কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়। এতে কয়লা আমদানি প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কয়লা আমদানিতে সময় লেগে যায় নভেম্বর পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অবশেষে কয়লার চালান পৌঁছানোয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুনরায় উৎপাদনে যেতে পারবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই পুনরায় উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

প্রসঙ্গত, ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা নিয়ে দেশের অন্যতম বড় বিদ্যুৎ প্রকল্প। এর প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাইয়ে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ডিসেম্বরে চালু হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করতে সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে ২২ লাখ ৫ হাজার টন কয়লা আমদানি করা হয়েছিল।

জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যোগ করার মাধ্যমে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।

কর্মকর্তারা আশা করছেন, কয়লার সরবরাহ নিয়মিত হওয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে উৎপাদন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

n

পাঠকের মতামত