উখিয়া নিউজ ডটকম- জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আজ সোমবার (২ জুলাই) কক্সবাজারে আসছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে একটি বিশেষ বিমানে কক্সবাজার বিমান বন্দরে তাদের পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সেখান থেকে সায়মন বিচ রিসোর্টে উঠবেন তারা। এরপর বেলা ১১টার দিকে তারা উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা হবেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বর্বরতার মুখে আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সরেজমিন দেখতে আজ কক্সবাজারে আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট । সোমবার সকালে কক্সবাজার বিমান বন্দর হয়ে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করার কথা রয়েছে তাদের। পরিদর্শনের সময় কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানরত কিছু নির্যাতিত রোহিঙ্গার সঙ্গে তারা কথা বলবেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানরত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার ত্রাণ কেন্দ্র, চিকিৎসা সেন্টার ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ঘুরে দেখার কথা রয়েছে।’
আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিব ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের আগমনকে ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি বাড়তি তিন হাজার জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।’
এর আগে গত শনিবার দিবাগত রাত ২টার পর কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছান জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিমানবন্দরে জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্বাগত জানান। তার আগে বিকালে ঢাকা পৌঁছান বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। দুইজনই র্যা ডিসন হোটেলে উঠেছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ আগস্ট রাতে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতার মুখে আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এর আগে বিভিন্ন সময় সে দেশের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে আসা আরও ৪ লাখের মতো রোহিঙ্গা গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে।
জাতিসংঘ ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে আসছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ রোহিঙ্গা সঙ্কটকে এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকার গত বছরের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করলেও নানা জটিলতায় বিষয়টি এগোয়নি। কারণ, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলে আসছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা শরণার্থীরা যাতে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং সম্মানের সঙ্গে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারে এবং এই প্রত্যাবাসন যাতে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করে হয়, তা নিশ্চিত করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে মিয়ানমারকে।
এর আগে অর্থাৎ ২০০৮ সালের ‘ইউএনএইচসিআর’ এর শীর্ষ পদে থাকা অবস্থায় জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসেছিলেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশে এটাই তার প্রথম সফর। তবে বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম দুই বছর আগেই একবার বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন।