টেকনাফ প্রতিনিধি :
টেকনাফে চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে তথ্যসংগ্রহকারী কর্তৃক টাকা নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠছে। ফরম সংকট দেখিয়ে হালনাগাদে নিয়োজিত তথ্যসংগ্রহকারীরা লোকজনের কাছ থেকে ইচ্ছামত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। নিরীহ লোকজন নিরুপায় হয়ে টাকার বিনিময়ে হলেও অনেকটা ভোটার তালিকায় নিবন্ধিত হচ্ছেন। বিনামূল্যে ভোটার তালিকায় নিবন্ধনের নির্দেশনা থাকলেও টেকনাফে নিয়োজিত তথ্য সংগ্রহকারীদের অনেকেই তা মানছেন না। বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোটার উপযোগী লোকদের নিবন্ধনের নির্দেশনা টেকনাফ সীমান্তে উপেক্ষিত হচ্ছে বলে লোকজনের অভিযোগ। নির্বাচন কমিশনের দিক নির্দেশনা না মেনে তথ্যসংগ্রহকারীরা ইচ্ছামত নিবন্ধন করছেন বলে ভোটার হওয়ার উপযুক্ত লোকজন জানান। তাদের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় সব কাগজ থাকার পরও টাকা দিতে অস্বীকৃতি লোকদের ফরম সংকট দেখিয়ে তথ্যসংগ্রহকারীদের অনেকে রহস্যজনক কারণে ভোটারদের নানাভাবে হয়রানী করছেন। ভোটার হালনাগাদে দায়িত্ব পালনকারী তথ্যসংগ্রহকারী কর্তৃক টাকা নেওয়ার বিষয়টি দিবালোকের মত সত্য হলেও নিবন্ধন তালিকা থেকে বাদ পড়বেন ভয়ে অনেকে মুখ খুলছেন না। ২৫ জুলাই থেকে ভোটার হালনাগাদের কাজ শুরু হলেও উপজেলার অনেক এলাকার ভোটাররা এখনো তথ্যসংগ্রহকারীদের দেখেননি। সুবিধা হাসিলের জন্য দায়িত্ব পালনকারী তথ্য সংগ্রহকারীরা কোন এক নির্দিষ্ট বাড়ীতে বসে কাজ করছেন। তথ্যসংগ্রহকারীরা টাকা নিচ্ছেন এমন অভিযোগে ভুক্তভোগীদের অনেকে টেকনাফের ইউএনও বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন। এদিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী পাড়া এলাকার মৃত রাগিব উল্লাহর পুত্র ছৈয়দ আহমদ জানান, আমার স্ত্রী মাহমুদাকে ভোটার করার জন্য তথ্যসংগ্রহকারীর নিকট গেলে ফরম নেই জানিয়ে তিনি আমার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা দাবী করেন। ওই এলাকায় ভোটার তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বে রয়েছেন লেদা জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক দেলোয়ার হোছাইন। তিনি বাড়ী বাড়ী না গিয়ে একটি বাড়ীতে বসে ইচ্ছামত টাকার বিনিময়ে ভোটার করছেন বলে লোকজন অভিযোগ করেন। রঙ্গিখালী এলাকার মৃত অছিয়র রহমানের পুত্র হাসান আলী পিন্টু বলেন, রশিদা এবং মিনারা নামের আমার দুই ভাতিজীকে নিয়ে তথ্যসংগ্রহকারীর নিকট গেলে তিনি দুই হাজার টাকার কমে ভোটার করছেন না। তিনি আরো জানান, সৌদি আরব ফেরত আমার ভাতিজা রঙ্গিখালী এলাকার মৃত মকতুল হোছনের পুত্র জাফর আলমকে দশ হাজার টাকার কমে ভোটার করেননি এই তথ্যসংগ্রহকারী।
একই এলাকার রশিদ আহমদের পুত্র নুরুল আলম জানান, অনেক ঘুরাঘুরির পরে বুঝিয়ে সুঝিয়ে পাঁচশ’ টাকার বিনিময়ে মাষ্টার দেলোয়ার আমাকে ভোটার করেছেন। মাদরাসা পাড়া এলাকার মৃত সুলতান আহমদের পুত্র আবুল হাশিম জানান, ছেলে আজিমকে ভোটার করতে গেলে এই তথ্যসংগ্রহকারী আমার কাছ থেকে এক হাজার টাকা দাবী করেন। স্বর্ণের নোলক বন্ধক দিয়ে ছেলেকে ভোটার করার আশায় আমি দাবীকৃত টাকা যোগাড় করে লেদা স্কুলে যাচ্ছি। আলীখালী দরগা রাস্তার মাথা, রঙ্গিখালী পাড়া, মাদরাসা পাড়ায় ভোটার তথ্য সংগ্রহে নিয়োজিত এই স্কুল শিক্ষক টাকা ছাড়া ওই এলাকার লোকদের ভোটার করছেন না। হ্নীলা হোয়াকিয়া পাড়া এলাকার বাহাদুর শাহ তপু অভিযোগ করেন, তাঁর এলাকায় নিয়োজিত জনৈক তথ্যসংগ্রহকারী বাড়ী বাড়ী না গিয়ে নির্দিষ্ট একটি স্থানে বসেই পছন্দমত লোকদের ভোটার করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে তথ্যসংগ্রহকারী দেলোয়ার হোছাইন জানান, ভাই এসব বাদ দেন। আপনার কেউ বাদ পড়লে বলেন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি ইতিমধ্যে অনেকের মাধ্যমে আমি জেনেছি। টাকা নিয়েছেন এমন তথ্যসংগ্রহকারীদের অনেককে আবার ফোনে সাবধানও করেছি। এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় সব ধরণের ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভোটার হালনাগাদ বিশেষ কমিটির সভাপতি জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক জানান, ভোটার নিবন্ধন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে কারো কাছ থেকে কোন ধরণের টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। হালনাগাদে দায়িত্ব পালনকারী তথ্যসংগ্রহকারীসহ সংশ্লিষ্টদের কেউ অনিয়ম করলে তিনি সাথে সাথে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
চট্টগ্রামের পটিয়ায় ৫শ’ পিস ইয়াবাসহ প্রেমিক যুগলকে গ্রেফতার করেছে পটিয়া থানা পুলিশ। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ...
পাঠকের মতামত