উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫/০৮/২০২২ ৬:০০ এএম

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন জাতিসংঘের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত নোয়েলিন হেইজার।

বুধবার বিকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরে সাক্ষাতকালে রোহিঙ্গা সমস্যা এবং এর সমাধানের বিষয়ে আলোচনা হয়।

মানবিক বিবেচনায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক, পরিবেশসহ নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এবং রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় স্বদেশে টেকসই প্রত্যাবাসনই সমস্যার একমাত্র সমাধান বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অচলাবস্থার ফলে রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিরাজমান হতাশা তাদের আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডসহ উগ্রবাদে সম্পৃক্ত করতে পারে যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে উঠবে।

জাতিসংঘের বিশেষ দূত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ ধরে রাখতে এবং রাখাইনে প্রত্যাবাসন সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে জাতিসংঘ, আসিয়ান এবং মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তবে এক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকারের ভূমিকাই মুখ্য বলে তিনি স্বীকার করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চলমান দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক প্রচেষ্টার বিষয়ে বিশেষ দূতকে অবহিত করেন। মিয়ানমারে সৃষ্ট এই সমস্যার সমাধান একমাত্র মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য বলে তিনি মন্তব্য করেন। মানবিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশে যেসব শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তা তাদের প্রত্যাবাসনের পরে রাখাইন সমাজে টেকসই সহাবস্থানে সহায়ক হবে বলে উল্লেখ করেন।

বিশেষ দূত মঙ্গলবার কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। তিনি বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারের নেতৃত্বে পরিচালিত মানবিক কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের আগ্রহ ব্যক্ত করেছে বলে বিশেষ দূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ পরিস্থিতি তৈরি ও তাদের ওপর পরিচালিত অমানবিক নির্যাতনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক বিচারিক কাঠামোর মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্যও দাবি জানান। উত্থাপিত দাবি অর্জিত হলে রোহিঙ্গা আস্থা অর্জন সহজ হবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেন। উত্তর রাখাইনে আসিয়ান ও জাতিসংঘের অর্থবহ উপস্থিতি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপনের জন্য বিশেষ দূতকে অনুরোধ করেন। এ অঞ্চলে তার কাজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে দ্রুততম সময়ে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করতে মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত নোয়েলিন হেইজার বিশেষ ভূমিকা পালন করবেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন

পাঠকের মতামত

ঘটনাপ্রবাহঃ রোহিঙ্গা ঢলের ৫ বছর

আরও ৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশে আট হাজারের মতো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। মিয়ানমার থেকে ...

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইউএনএইচসিআরের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি সোমবার প্রধান উপদেষ্টাকে ফোন করলে ড. ইউনূস বাংলাদেশে আশ্রিত ...

সাবেক এমপি হাজী সেলিম আটক

ঢাকা-৭ সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রবিবার (১ ...

বুধবার থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান চালানো ...