নিউজ ডেস্ক::
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্গম সীমান্ত দিয়ে কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। আবারও কেউ কেউ চলে উখিয়া, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে চলে গেছে।
দুর্গম সীমান্তের কিছু এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টহল দেওয়া সম্ভব হয় না। এই সুযোগে দালালের মাধ্যমে কিছু রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। তাঁরা বলেন, গত তিন দিনে উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের দুর্গম বাইশফাঁড়ি, আশারতলী ও তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে শতাধিক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ২০-২৫ ফুট প্রস্থের তুমব্রু খালের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য আর এপারে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন। দুই পারের বাসিন্দাদের মধ্যে যাতায়াত রয়েছে। চেহারা আর ভাষাগত মিল থাকায় তুমব্রু খাল পার হয়ে কৌশলে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা। এই রোহিঙ্গারা উখিয়ার কুতুপালং শিবিরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তসলিম ইকবাল চৌধুরী বলেন, দালালের মাধ্যমে স্থল সীমান্তের বিভিন্ন দুর্গম পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা নাইক্ষ্যংছড়ি ঢুকলেও তাদের এলাকায় থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া পুলিশ-বিজিবি আটক করে আবার মিয়ানমারে ফেরত পাঠাবে এই ভয়ে তারা দ্রুত নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দিকে চলে যাচ্ছে। গহিন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হেঁটে যায় বলে পুলিশ ও বিজিবি রোহিঙ্গাদের ধরতে পারছে না।
ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের একটি জঙ্গলে গতকাল সকালে কিছু সময়ের জন্য আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের কয়েকটি রোহিঙ্গা পরিবার। তাদের বাড়ি রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের ঢেকিবনিয়া, কুমিরখালী, শিলখালী, বলিবাজার ও নাকপুরা গ্রামে।
ছেনুয়ারা বেগম ও শামশুন নাহার নামে দুই রোহিঙ্গা নারী সাংবাদিকদের বলেন, চার দিন হেঁটে নাইক্ষ্যংছড়ি এসেছেন তাঁরা। শফিকা বেগম নামের আরেক রোহিঙ্গা নারী বলেন, তিন দিন হেঁটে তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে পৌঁছেন। পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই আনতে পারেননি।
ঘুমধুম সীমান্তের দায়িত্বে থাকা কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, নাফ নদী দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা রোহিঙ্গাদের আবার মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু গভীর রাতে দালালের মাধ্যমে নাইক্ষ্যংছড়ির দুর্গম কিছু পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে শোনা যাচ্ছে। অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের এলাকায় পাওয়া গেলে আটক করে আবার মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। প্রথম আলো