“আমি ভালো আছি বাবা, কোনো চিন্তা করো না। ঈদের আগেই বাড়ি চলে আসব। আমাকে ছাড়া কিন্তু কোরবানির গরু কিনো না। এটাই ছিল বাবার সাথে মেয়ে প্রিয়ার শেষ কথা। কথা রেখেছেন মেয়ে। ঈদের আগেই (বুধবার রাতে) প্রিয়া বাবার বাড়ি গেল ঠিকই, তবে লাশ হয়ে।
মাত্র ৬ দিন আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন প্রিয়া আক্তার। মেহেদির রং মুছতে না মুছতেই অকালে ঝরে গেল প্রিয়ার জীবন। ঘাতক বাসের চাপায় না ফেরার দেশে চলে যেতে হলো তাকে। বুধবার বিকালে ঈদের কেনাকাটা শেষে স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি যাচ্ছিলেন। কিন্তু বৃষ্টি ভেজা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ক্রসব্রিজ এলাকায় তাদের মোটরসাইকেলটি পৌঁছালে পেছন দিক থেকে আসা দ্রুতগামী শামীম এন্টারপ্রাইজের একটি বাস তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান প্রিয়া। গুরুতর আহত হন স্বামী রনি মোল্লা।
নিহত প্রিয়া টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলা বাদবাহলি গ্রামের আক্কাস আলীর মেয়ে।
রনির চাচা মোহাম্মদ আলী জানান, গত শুক্রবার মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পুটিয়াজানি গ্রামে ইমাম মোল্লার ছেলে রনি মোল্লার সঙ্গে বেশ ধুমধাম করে বিয়ে হয়। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে প্রিয়া ছিল সবার বড়। বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ওই দিনই প্রিয়াকে (১৯) শ্বশুরবাড়ি নিয়ে আসে। বিয়ের পর প্রথম ঈদ পাওয়ায় প্রিয়া তার স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। এজন্য স্বামী-স্ত্রী মিলে মানিকগঞ্জ শহরে যায় কেনাকাটার জন্য। কেনাকাটা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঘাতক বাস প্রিয়ার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহত প্রিয়ার স্বামী সেনাবাহিনীর সদস্য রনিকে গুরুতর আহত অবস্থায় মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে ঢাকা সিএমএস হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘিওর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, ঘটনার পর পরই বাসটিকে জব্দ করা হলেও চালক পালিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।