শামীম ইকবাল চৌধুরী,নাইক্ষ্যংছড়ি ::
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী-করলিয়ামুরা সড়কের হলুদ্যাশিয়া মসজিদ সংলগ্ন স্থানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাত্রীবাহী টমটম এবং ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চলাচলে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। কয়েক দিন ধরে স্থানীয় কিছু লোক সড়ক সংস্কারের নাম ভেঙ্গে এবং এলাকার জন প্রতিনিধিদের সাথে কোন প্রকার আলোচনা না করে এসব যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ইউনিয়নের হলুদ্যাশিয়া মসজিদ সংলগ্ন স্থানে পানি জমে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে সড়কে চলাচলকৃত কিছু মোটর সাইকেল চালক সড়কের গর্তে অল্প বালি ও মাটি ফেলার নাম ভাঙ্গিয়ে দেদারছে টাকা আদায় করে আসছে। এতে আরও জানাযায়, প্রতিটি গাড়ী থেকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। গত(১১ আগষ্ট) শুক্রবার দাবীকৃত টাকা না দেওয়ায় ইউনিয়নের করলিয়ামুরা এলাকার আবু ছৈয়দের পুত্র খামার ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম (২২) কে বেদড়ক মারধরের অভিযোগও উঠেছে।
শুক্রবার সকালে বাড়ী থেকে ফার্মের মুরগির গাড়ীটির সাথে উক্ত স্থানে পৌছলে কয়েকজন মোটর সাইকেল চালক ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামকে কোন কথা ছাড়াই মারধর শুরু করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। মারধরে ক্ষ্যান্ত না হয়ে ব্যবসায়ীকে সড়কের পার্শ্বে এক দোকানে বেঁধে রাখে। এমনটাই অভিযোগ তার পিতা আবু ছৈয়দের।
তিনি পাহাড়বার্তাকে বলেন, সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। এর মধ্যে গাড়ি করে ফার্মের মুরগি বাজারে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ভাঙা রাস্তায় বালি ফেলে মেরামত করা হয়েছে বলে গাড়ি আটকে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের নির্দেশে তারা ৫০০ টাকা দাবি করেন। পরে তাঁদের দাবীকৃত ৫০০ টাকা না দিয়ে চলে গেলে শুক্রবার সকাল ৮ টায় আবারো গাড়ী আটকায় এবং চাঁদার অংকও বেড়ে যায়। তারা ৫ হাজার টাকা দাবী করে বসে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা ৭/৮ জন মোটর সাইকেল চালক মিলে এলোপাতাড়ী মারধর করে তার ছেলেকে।
আহত নুরুল ইসলাম জানায়, সড়ক সংস্কারের নামে টাকা উত্তোলনের বিষয় নিয়ে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে কেন লিখেছিস বলে লাথি, কিল-ঘুসি মারতে থাকে তারা। এক পর্যায়ে আমি মারধরের আঘাত সহ্য করতে না পেরে মাটিতে লুঠিয়ে পড়ি। প্রায় মিনিট দশেক মারধরের পর অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তায় ফেলে চলে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা সবাই স্থানীয় ইউপি নুরুল আজিমের অনুসারী। তার ছেলে আনোয়ার সহ কয়েকজনকে দিয়ে তিন-চার দিন ধরে চলাচলরত সব যানবাহন থেকে তিনি কম-বেশি টাকা তুলছেন। এ বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য নুরুল আজিমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও রিসিভ না হওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. আনোয়ার সাদেক জানান, বর্তমানে সড়কটি চলাচলে অনুপযোগী। জনগুরুত্বপূর্ন এ সড়কটির সংস্কার অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, সড়ক সংস্কারের নামে টাকা আদায় কোন মতেই মেনে নেওয়া যায় না।
মোটর সাইকেল চালক সমবায় সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, শুধু ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালকরা তিন-চারজন লোকজন দিয়ে বালি ও মাটি ফেলে সড়কটি ঠিক করা করেছে। এসবের খরচ হিসেবে কিছু টাকা নিতেই পারে। মারধর করে তারা খুবই অন্যায় করেছে। তবে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম বিষয়টি স্থানীয় ভাবে নিস্পত্তি হয়েছে বলে জানান।
বাইশারী তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ আবু মুসা বলেন, সড়কে চাঁদাবাজির বিষয় নিয়ে এলাকার কোন সচেতন ব্যক্তি বা ভূক্তভোগী অবগত করেন নাই। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।