প্রকাশিত: ১০/০৭/২০১৭ ১০:১৩ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:৫৯ পিএম

চট্টগ্রাম : নগরীতে গভীর রাতে ‘মাতাল ‍অবস্থায়’ হোটেলে ঢুকে পুলিশ পরিদর্শক মাইনুল ইসলাম ভূঁইয়ার তাণ্ডবের ঘটনায় বিব্রত হয়েছেন নগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সমালোচনার মুখে পড়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।

এদিকে ঘটনা তদন্তে সিএমপি কমিশনারের গঠন করা কমিটি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়েছে মর্মে সিএমপি কমিশনার বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করলে সদর দফতর মাইনুলকে সাময়িক বরখাস্তের ব্যবস্থা নেবে।

রোববার (০৯ জুলাই) সিএমপির কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

গত ৩ জুলাই গভীর রাতে নগরীর আগ্রাবাদে অভিজাত আবাসিক হোটেল সেন্টমার্টিনে ঢুকে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটান আলোচিত-সমালোচিত পুলিশ পরিদর্শক মাইনুল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি ওই হোটেলের চারজন কর্মী এবং ডবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) সৈয়দ আলমকে পেটান। এসময় তিনি মাতাল ‍অবস্থায় ছিলেন বলে অভিযোগ আছে।

ঘটনা তদন্তে সিএমপি কমিশনার নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (পশ্চিম) নাজমুল হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। কমিটিতে নগর পুলিশের ডবলমুরিং জোনের সহকারী কমিশনার এবং নগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন পরিদর্শক আছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫ জুলাই থেকে কাজ শুরুর পর তদন্ত কমিটির সদস্যরা প্রথমেই হোটেলের ভেতর এবং বাইরের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। এরপর আক্রান্ত হোটেলের চার কর্মীর বক্তব্য নিয়েছেন। উপ পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আলমের সাধারণ ডায়েরি সংগ্রহ করেছে কমিটি। এছাড়া সৈয়দ আলমেরও বক্তব্য নেয়া হয়েছে।

আক্রান্ত ব্যক্তি, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীসহ এই পর্যন্ত তদন্ত কমিটি ১১ জনের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে ‍জানা গেছে।

সূত্রমতে, অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক মাইনুল ইসলামকে তদন্ত কমিটি সামনে হাজিরের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি হাজির হতে পারেন।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপ কমিশনার (পশ্চিম) ফারুকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, তদন্ত কমিটি তাদের কাজ করছে। সাক্ষীদের বক্তব্য নেয়া শেষ হলে অভিযুক্তের বক্তব্য নেবে।

অভিযোগ প্রমাণ হলে মাইনুলের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি সিএমপি কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন দেবে। কমিশনার স্যার শাস্তির সুপারিশ করে পুলিশ সদর দফতরে অতিরিক্ত আইজির কাছে প্রতিবেদনটি পাঠাবেন। তারপর সাময়িক বরখাস্ত করা হতে পারে।

এদিকে পুলিশ পরিদর্শক মাইনুল ইসলাম ভূঁইয়ার বারবার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো নিয়ে বিব্রত এবং বিরক্ত হয়ে পড়েছেন সিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তারা।

দুই বছর আগে হোটেল থেকে বিনা অপরাধে ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটকের পর মারধর করে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন নগরীর সদরঘাট থানার তখনকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম ভূঁইয়া। ওই বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের পর বর্তমানে তিনি নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত আছেন।

এরপর গত জানুয়ারিতে নগরীর খুলশীতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত একটি গেস্ট হাউস থেকে অপ্রীতিকর অবস্থায় বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষকে আটকের পরও আলোচনায় এসেছিলেন মাইনুল, কারণ সেটির মালিক ছিলেন তিনি নিজে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএমপির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, মাইনুলের কর্মকাণ্ডে সিএমপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। পুলিশ ডিপার্টমেন্ট একজন কর্মকর্তার এই ধরনের গর্হিত অপরাধের দায় কাঁধে নিতে পারে না। আগেও মাইনুল শাস্তি পেয়েছেন। কিন্তু এরপরও তার বোধোদয় হয়নি। এবার তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ।

মাইনুল ইসলাম ভূঁইয়ার তাণ্ডব নিয়ে স্থানীয় ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম ইতোমধ্যে সিএমপি কমিশনার বরাবরে একটি প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এতে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলানিউজ

পাঠকের মতামত

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ছাড়া মিয়ানমারে শান্তি স্থায়ী হবে না

পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান ছাড়া মিয়ানমারে স্থায়ী শান্তি ও ...

পারকি সৈকতে ধরা ২৫ ভাসানচর থেকে পালাচ্ছেন রোহিঙ্গারা!

নোয়াখালীর ভাসানচরের আশ্রয়শিবির থেকে কৌশলে রোহিঙ্গারা পালিয়ে যাচ্ছেন! প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাব, আত্মীয়-স্বজনের কাছে যাওয়ার বাহানা, ...

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কক্সবাজারে সংবাদ সম্মেলন

জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদদের নিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক কটাক্ষ ও ব্যাঙ্গাত্মক কন্টেন্ট বানিয়ে অপপ্রচার ...