উখিয়া নিউজ ডেস্ক ::
[caption id="attachment_18526" align="alignleft" width="720"] আটক অস্ত্রলুটের মূল হোতা নুর আলম/ছবি, ওবাইদুল হক চৌধুরী[/caption]
টেকনাফের শালবন আনসার ক্যাম্পের কমান্ডার আলী হোসেনকে গুলি করে হত্যার কথা র্যাবের কাছে স্বীকার করেছে গ্রেফতার হওয়া নুর আলম। আলী হোসেন অস্ত্রাগারের চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দৌড়ে পালাতে চাইলে নুর আলম তাকে গুলি করে। এরপর তার নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ চক্র অস্ত্র ও গুলি লুট করে ক্যাম্প ত্যাগ করে। প্রথমে তারা বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ের গহীন অরণ্যে অস্ত্রগুলো লুকিয়ে রেখে আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে অস্ত্রগুলো বিভিন্ন জায়গায় স্থানান্তর করে। নুর আলমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এইসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারি পরিচালক (মিডিয়া) মিমতানুর রহমান।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত কুতুপালং এলাকায় অভিযান চালিয়ে গত বছর টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অবস্থিত আনসার ব্যারাকের অস্ত্র লুট ও আনসার কমান্ডার হত্যাকান্ডের মূল হোতা নুর আলমকে গ্রেফতার করে র্যাব। তাকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিমকুল মৌজার গভীর পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬টি অস্ত্র, ২ টি ম্যাগজি ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
গতকাল বুধবার বিকেলে অস্ত্র উদ্ধারের স্থান পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এসময় তিনি এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে অস্ত্র লুটের ঘটনায় পরিচালিত দীর্ঘ সময়ের অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
র্যাব কর্মকর্তা মিমতানুর রহমান জানিয়েছেন, মূলত অস্ত্র লুট করার উদ্দ্যেশে দুর্র্বৃত্তরা আনসার ক্যাম্পে হামলা করেছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল লুট করা অস্ত্রের মাধ্যমে তাদের অস্ত্র ভান্ডার বৃদ্ধি করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করা এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী দলের কাছে অস্ত্র ও গুলি সরবরাহ করা। গ্রেফতার নুর আলমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় সে ওই সংঘবদ্ধ চক্রটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। যারা বিগত ৫/৬ বছর যাবৎ টেকনাফের শাপলাপুর, বাহারছড়া, লেদা ও কক্সবাজারে উখিয়া, কুতুপালং এলাকায় ডাকাতি এবং অপহরণ করে আসছিল। ঘটনার দিন নুরুল আলম ও বড় খায়রুল আমিন দা দিয়ে আনসার ক্যাম্পের বেষ্টনি কেটে আনসার ক্যাম্পে প্রবেশ করে এবং বাকীরা তাদের অনুসরণ করে। তারা আনসার ক্যাম্পের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার পর ডিউটিরত আনসার সদস্য অজিত বড়ুয়া’কে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। তারপর তারা আনসার ক্যাম্পের ভিতরে ঢুকে ঘুমন্ত অন্যান্য আনসার সদস্যদেরকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। আনসার ক্যাম্প কমান্ডার পিসি আলী হোসেন অস্ত্রাগারের চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দৌড়ে পালাতে চাইলে নুরুল আলম তাকে গুলি করে।
মিমতানুর রহমান জানান, গত ৯ ও ১০ জানুয়ারী র্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে আনসার ক্যাম্প থেকে লুট করা অস্ত্র ও গোলাবারুদের ১টি এসএমজি, ৩টি এম-২ রাইফেল, ১টি চাইনিজ রাইফেল এবং ১৮৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। অবশিষ্ট ৬টি অস্ত্র ও ৬ রাউন্ড গুলি নুর আলমের জিম্মায় ছিল। এই ৬টি অস্ত্র ও গুলি গতকাল বুধবার উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত মোট ৯ জন’কে এখন পর্যন্ত র্যাব আটক করতে সক্ষম হয়েছে। লুন্ঠিত ৬৭০ রাউন্ড গুলির মধ্যে এ পর্যন্ত ১৯৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৪৭৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধারে র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সকল আসামীদের আরও বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে এ সম্পর্কে আরো তথ্য পাওয়া যেতে পারে।