কক্সবাজার-৪ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদিকে স্বাগত জানাতে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় এক হাজারের বেশি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। কক্সবাজার-টেকনাফ আঞ্চলিক মহাসড়কের উখিয়া উপজেলার কোর্টবাজার থেকে টেকনাফের নয়াপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের বিভিন্ন অংশে এসব তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি তোরণে লাগানো হয়েছে কারামুক্ত সাংসদ বদির ছবি। তোরণ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।
জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের দায়ে ২ নভেম্বর ঢাকার একটি আদালত সাংসদ বদিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর সেদিনই তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ২০ নভেম্বর রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, ১৮ দিন পর সাংসদ বদি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (আজ) সকালে তিনি ঢাকা থেকে বিমানে কক্সবাজারে আসবেন। সেখান থেকে গাড়িবহরযোগে তাঁকে (বদিকে) উখিয়া ও টেকনাফে আনা হবে। তাঁর আগমন উপলক্ষে এবং স্বাগত জানাতে দলের অনুরাগী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সড়কের ওপর তোরণ নির্মাণ করেছেন।
গতকাল সকালে উখিয়ার কোর্টবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সড়কে শতাধিক তোরণ স্থাপন করা হয়েছে। উখিয়া সদরের মাত্র এক কিলোমিটার অংশেই রয়েছে প্রায় তিন শ তোরণ।
সাংসদ বদি জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরে আসছেন, এ কারণে দলীয় নেতা-কর্মী, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের জনগণ তাঁকে স্বাগত জানাতে নিজেদের উদ্যোগে এসব তোরণ নির্মাণ করেছেন বলে জানান টেকনাফ পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলম বাহাদুর। দুই উপজেলা থেকে পাঁচ শতাধিক যানবাহনে করে নেতা-কর্মীরা কক্সবাজার বিমানবন্দরে যাবেন বলে জানান তিনি।
নাম না প্রকাশের শর্তে টেকনাফ উপজেলার আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতেও কখনো টেকনাফের সড়কে এত তোরণ বানানো হয়নি।
তোরণ নির্মাণে নিয়োজিত শ্রমিকেরা বলেন, প্রতিটি তোরণ নির্মাণ ও একাধিক ডিজিটাল ব্যানার স্থাপনে পাঁচ-ছয় হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। গত দুই দিনে তাঁরা টেকনাফ পৌরসভার দুই কিলোমিটারে ৬৬টি তোরণ নির্মাণ করে দিয়েছেন।
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলী বলেন, সাংসদের গাড়িবহরে যোগ দিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নামে যারা এলাকায় মাইকিং করছে, তারা আসলে বদির অনুসারী। দলের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তোরণ নির্মাণের বিপরীতে এত টাকা খরচের উৎস কী, তা-ও তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, ‘আদালত তাঁকে (বদিকে) সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আবার উচ্চ আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছেন। এতে উল্লাসের কিছু নেই।’ সুত্র : প্রথম আলো