মূলঃ খুশবন্ত সিং
অনুবাদঃ মোহাম্মদ শাহজাহান
[খুশবন্ত সিং ভারতের প্রথিতযশা উপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সাংবাদিক, কলামিষ্ট, আইনজীবী, কূটনীতিক ও রম্যলেখক ছিলেন। সব্যসাচী এই লেখক আমরণ লিখে গেছেন ইংরেজি ভাষায়। ভারতের আধুনিক এই বিশ্বখ্যাত লেখক ছিলেন কৌতুকপ্রিয়। তাঁর লেখা এই কৌতুকগুলো নিয়ে বেরিয়েছে বেশ ক’টি সংকলন। এরই মধ্য থেকে অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা নিচের কৌতুকগুলো সংগ্রহ করে পাঠক-পাঠিকার মনোরঞ্জনে বঙ্গানুবাদ করেছি অধম]
এক-মুরগীঃ
গ্রামের মেঠো পথে দেখা হয়ে গেলো সান্টা আর বান্টার। সান্টার কাঁধে বড়সড় এক চটের থলে।
-কিরে, সান্টা-থলের মধ্যে কী? বান্টা জিজ্ঞেস করে।
-মুরগী। সান্টা উত্তরে জানায়।
-কয়টা মুরগী বলতে পারলে আমাকে একটা দিয়ে দিবি? বান্টা বলে।
-উভয়টাই দিয়ে দেবো।
-ঠিক আছে-পাঁচটা মুরগী। বান্টা বলে।
দুই-লোভঃ
লালা গরীব চন্দ একজন ধনী জমিদার। তিনি ম্যানেজারকে ডেকে তার সমস্ত সম্পত্তির পরিমাণ হিসেব করতে বললেন। তিনি দেখতে চান, ওই সম্পত্তিতে ভর করে তার কতোদিন চলবে। ম্যানেজার তার সব সম্পত্তির হিসেব বের করে জানালেন-ওই সম্পত্তি তার পরবর্তী সাত পুরুষও খেয়ে শেষ করতে পারবে না। কিন্তু এতেও লালা গরীব চন্দ খুশি হতে পারলেন না। বরং চেহারা দেখে মনে হলো, বেশ বিমর্ষ হয়ে উঠেছেন তিনি।
-হায়! আমার পরবর্তী অস্টম পুরুষের/বংশধরের কী যে হবে? দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন তিনি।
তিন-মা কা বেটীঃ
এক নায়িকা সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। অদূর ভবিষ্যতে বিয়েশাদী করবেন কিনা, জিজ্ঞেস করা হলো তাকে।
-কখনোই না। আমি আমার মায়ের পদাংকই অনুসরণ করবো। মায়ের মতো আমিও বিয়ে করবো না কখনও।
চার-নব আবিষ্কারঃ
-আমি নতুন এক ধরণের কম্পিউটার আবিষ্কার করেছি। এই কম্পিউটারের স্বভাব-চরিত্র মানুষের মতোই। বান্টা বলে সান্টাকে।
-যেমন? সান্টা জানতে চায়।
-এই কম্পিউটার যখন কোন ভুল করে, এটি তখন অন্য কম্পিউটারের উপর দোষ চাপায়।
পাঁচ-সস্তাঃ
রাতের খাবার খেতে একটা সস্তা রেস্তোরায় গেলো বান্টা। ওই রেস্তোরায় বেয়ারা হিসেবে কর্মরত রামলাই নামের তার এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেলো বান্টার।
-রামলাই, এ রকম নিম্নমানের সস্তা রেস্তোরায় কাজ করতে লজ্জা লাগে না তোর? বান্টা জিজ্ঞেস করে।
-আমি নিম্নমানের সস্তা রেস্তোরায় কাজ করি ঠিক, কিন্তু তোর মতো এ রকম রেস্তোরায় খাই না আমি। রামলালের উত্তর।
ছয়-চাচীঃ
রাকেশ- মীনার সঙ্গে তোর এনগেজমেন্টটা শেষমেশ ভেঙ্গেই গেলো?
মহেশ- ও আমাকে স্বামী হিসেবে বরণ করে নিতে চাইলো না কিছুতেই। আমি দরিদ্র মানুষ। কী আর করা।
রাকেশ- তুই দরিদ্র হয়েছিস, তো কী হয়েছে? তোর না শহরে মস্ত ধনী এক চাচা আছে? এই চাচার কথা বলিসনি মীনাকে?
– তা কি বলিনি আর।ওই কথা বলাতেই তো মীনা এখন আমার চাচী।
সাত-সম্পাদকঃ
পত্রিকার এক সম্পাদক একদা যা লিখলেন তা এ রকমঃ
‘এই সম্পাদকীয় কলামে কোন ভুল দেখতে পেলে অবাক হবেন না, দয়া করে। আমরা আমাদের পত্রিকায় সবার জন্যেই কিছু না কিছু ছাপি; কিছু মানুষ তো এমন আছেন যারা সবকিছুতে ভুল খুঁজে বেড়ান সর্বদা।’
মোহাম্মদ শাহজাহানঃ এডভোকেট, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।