অনিয়মিত পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব নারীদের একটি সাধারণ সমস্যা। আপনি জেনে অবাক হবেন, অনেক নারীই প্রজনন বছর জুড়েই অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যায় পড়েন। ঋতুস্রাব চক্রের এই অনিয়ম কিংবা রক্তস্রাব কম হওয়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘অলিগোমেনোরিয়া’ বলা হয়। আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে ৩৬ দিনের ব্যবধানে (দুই ঋতুচক্র বা প্রতিবছর আটটি চক্রের কম সময়) পিরিয়ড হওয়াকে অনিয়মিত পিরিয়ড বলে।
২০১১সালে জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রোনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় ৫ শতাংশ বয়স্ক নারীদের অনিয়মিত পিরিয়ড একটি সাধারণ সমস্যা।
অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়ার সাধারণ তিনটি কারণ সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। আসুন কারণগুলো জেনে নিই-
অতিরিক্ত শরীরচর্চা
আমরা প্রত্যেকেই জানি সুস্থ জীবনধারার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করা প্রয়োজন।কিন্তু খুব বেশি শরীরচর্চা থাইরয়েড, অ্যাড্রিনাল এবং পিটুইটারি গ্রন্থিগুলোতে অতিরিক্ত চাপ দিয়ে থাকে। তাই যেসব নারী অতিরিক্ত শরীরচর্চা করেন তাদের ক্ষেত্রে হঠাৎ করেই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। অতিরিক্ত শরীরচর্চায় যে পরিশ্রম হয় তাতে স্ট্রেস লেভেল বা চাপের মাত্রা বেড়ে যায়।সেইসঙ্গে যৌন হরমোন নিয়ন্ত্রণে শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি নিঃশেষ করে। যেসব নারীরা দৌঁড়ান অথবা বেলি ড্যান্সের মতো শারীরিক কসরত অনুশীলন করেন তাদের অনিয়মিত পিরিয়ড দেখা দেয়।
নিম্নমানের ডায়েট
নিম্নমানের ডায়েট মানে যেসব খাবারে পুষ্টিগুণ কম এবং উচ্চমাত্রার উদ্দীপক যুক্ত।এসব খাবার অ্যাড্রিনাল এবং থাইরয়েড গ্রন্থির ক্ষতি করতে পারে। উচ্চমাত্রার চিনি, চর্বি এবং পেস্ট্রি সাইড খাবার থাইরয়েড এবং অ্যাড্রিনালের অবসাদে অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। এগুলো অবসাদ গ্রস্তের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বেড়ে যাওয়া অবসাদের মাত্রা অপটিমাল ফাংশনের প্রয়োজনীয় হরমোনে বাধা দেয়।ফলে পিরিয়ড হতে দেরি হতে পারে। যেসব নারীরা অনিয়মিত পিরিয়ড সমস্যায় ভোগেন তারা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, উচ্চমাত্রা সম্পন্ন চর্বি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। যদি কারো ওজন কম হয় তবে উচ্চ-ক্যালরিযুক্ত সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
মাত্রাতিরিক্ত মানসিক চাপ
দীর্ঘ দিন ধরে চাপের প্রভাবে আপনার শরীর ডিম্বাশয়ের বিকাশনা করে শক্তি সংরক্ষণ করে। এছাড়াও অ্যাড্রিনালের অধিক পরিমাণ কাজের কারণ হতে পারে কোনো আঘাতজনিত ঘটনা। এতেই স্ট্রোজেনের মতো অন্যান্য প্রজনন হরমোন উৎপাদনে ব্যাহত হতে পারে। ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কম হলে শরীর গর্ভধারণে সক্ষম হয় না। ফলে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দীর্ঘায়িত হয়।