করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে আতঙ্কে দেশের মানুষ। সবাইকে যথাসম্ভব ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যেতে বলা হচ্ছে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যারা চিকিৎসার দায়িত্বে আছেন, তাদের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে।
এমনই একজন চিকিৎসক তাহমিনা আহমেদ তন্নী, যিনি দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন।
তার বাবা-মায়ের চিকিৎসার জন্য তিনি কয়েক দিনের ছুটিতে ঢাকায় বাসায় এসেছিলেন। ছুটি শেষে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় তার মা একটি প্রসঙ্গে তাকে বলেন, “শোন, অন্যকে সেবা দিতে যেয়ে তুই যদি মরেও যাস আমি কখনোই আফসোস করব না। কিন্তু তুই যদি এই সময় অন্যের জন্য কিছু না করিস তাহলে সেটা আমার জন্য লজ্জাজনক হবে।’
তার মায়ের এই উপদেশের কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন এই চিকিৎসক। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আব্বা আম্মার ট্রিটমেন্ট করানোর জন্য কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে বাসায় এসেছিলাম। আব্বা -আম্মা দুজনই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথিসহ নানা রোগে আক্রান্ত। আপাতত কিছু কাজ গুছিয়ে ফিরে যাচ্ছি দিনাজপুরে। করোনার এই ক্রিটিকাল সময়ে আমার ডিউটি চলছে মেডিসিন বিভাগে। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক রোগী এবং তাদের এটেন্ডেন্টের ভিড়যুক্ত ওয়ার্ড বলে সব হাসপাতালের এই বিভাগটার একটা বদনাম আছে। আব্বা-আম্মা স্বভাবতই আমাকে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন কিন্তু সামনা-সামনি যেভাবে সাহস দিচ্ছেন তাতে অবাক না হয়ে পারছি না।’
‘দুজন অসুস্থ মানুষকে রেখে যাচ্ছি এই শহরে (ঢাকায়); রেখে যাচ্ছি সমস্ত স্মৃতি আর আমার ভালোবাসা। কোনো প্রোটেকশন ছাড়া ডিউটি করার পর এই শহরে ফিরে আসতে পারব কি না জানি না। শুধু জানি সৃষ্টিকর্তার হাতে প্রিয় মানুষগুলোকে রেখে যাচ্ছি। তিনিই একমাত্র হেফাজতকারী।’
পাঠকের মতামত