কক্সবাজারের টেকনাফে অস্ত্রধারী অপহরণকারী চক্রের হাতে জিম্মি থাকা আতিক নামে অপহৃত এক যুবক ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে নিজের প্রাণ বাঁচিয়ে ঘরে ফিরে এসেছে।
প্রাণ বাঁচিয়ে ফেরত আসা অপহৃত আতিক হচ্ছে- হ্নীলা নাটমোরা পাড়ার বাসিন্দা আব্দুস সালামের পুত্র।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে টেকনাফ হ্নীলা ইউপির অন্তর্গত মোচনী রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প থাকা তার এক মোটরসাইকেল করে পৌঁছে দিতে ক্যাম্পে গেলে অপহৃতের শিকার হয় আতিক।
সংঘটিত ঘটনার কয়েক ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পর সেই দিন থেকে সন্ত্রাসীরা ভুক্তভোগী পরিবারকে ফোন করে তাদের ছেলেকে ব্যাপক নির্যাতন করার শব্দ শুনানোর পাশাপাশি ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দিতে থাকে।
এরপর থেকে আতিকের পিতা আব্দুস সালাম গহীন পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি থাকা পুত্রের প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহায়তায় টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে বিষয়টি অবিহিত করে।
এরপর অপহৃত যুবককে উদ্ধার করার জন্য টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের বেশ কয়েকটি দল স্থানীয় জনতাকে সাথে নিয়ে বেশ কয়েক দফা গহীন পাহাড়ী অরণ্যে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা শুরু করে। তবে সেই সাঁড়াশি অভিযানে অপহৃত হওয়া আতিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
অবশেষে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে শরীরের বিভিন্ন অংশে নির্যাতন চিহ্ন নিয়ে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে পরিবারের কাছে ফেরত আসতে সক্ষম অপহৃত আতিক।
এবিষয়ে জানতে চাইলে হ্নীলা ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, ঘটনার পর দিন থেকে টেকনাফ থানা পুলিশ ও জনগণকে সাথে নিয়ে গহীন পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা শুরু করি। উক্ত অভিযানে আমরা সফল হয়নি।
অবশেষে অপহরণকারীদের হাত থেকে ছেলের প্রাণ বাঁচাতে ভুক্তভোগী পরিবার ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে আতিককে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছে। ভিকটিমের পিতা আব্দুস সালামও একই সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তার ছেলেকে নির্মম ভাবে নির্যাতন করেছে সন্ত্রাসীরা। ছেলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের ক্ষত চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি গিয়াস উদ্দিন সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, ঘটনার পর দিন থেকে দফায় দফায় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা শুরু করি। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা দিশেহারা হয়ে আতিককে ছেড়ে দিতে বাধ্য হলে আমরা তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্যও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সন্ত্রাসীদের মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়টি তিনি অবগত নয় বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
পাঠকের মতামত