নিউজ ডেস্ক::
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশ শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার। রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে মঙ্গলবার ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বলছে, আনান কমিশন ছাড়াও দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউ মিয়েন্ট সোয়ে নেতৃত্বাধীন সরকারের গঠিত একটি কমিটির সুপারিশও পর্যালোচনা করবে নতুন এ কমিটি।
[caption id="attachment_16407" align="alignleft" width="624"] কফি আনান[/caption]
মিয়ানমারের প্রভাবশালী ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ইরাবতি বুধবার এক প্রতিবেদনে বলছে, ওই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে গত মাসে বেশ কিছু সুপারিশসহ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে উভয় কমিশন। কমিটি গঠনের একদিন পর সুপারিশ বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান, দেশটির সামাজিক কল্যাণ, ত্রাণ এবং পুনর্বাসন মন্ত্রী ইউ উইন মিয়াত আয়ের সঙ্গে কথা বলেছে ইরাবতি।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, ধর্ম, বর্ণ, নাগরিকত্ব, লিঙ্গ নির্বিশেষে সব গোষ্ঠীর শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবায় সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে ও বাস্তবায়নে সুপারিশ যাচাই প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে কাজ করবে নতুন কমিটি। মাদক ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই কমিটি কাজ করবে বলে জানানো হয়েছে। কমিটির সহ-চেয়ারম্যান রাখাইন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ইউ নি পু। নতুন এই বাস্তবায়ন কমিটি আইনের শাসন, স্থিতিশীলতা, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য, নিরাপত্তা, অর্থনীতি, সামজিক কল্যাণ ও মৌলিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে কাজ করবে।
একই সঙ্গে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর গ্রাম, মানবিক ত্রাণ সহায়তা বিতরণ ও অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতদের জন্য আশ্রয়শিবির বন্ধ করে তাদের পুনর্বাসন করা হবে। প্রতি চার মাস অন্তর এই কমিটি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ব্যাপারে তাদের অগ্রগতির তথ্য প্রকাশ করবে। এ কমিটির প্রথম কাজ কী হবে; এমন প্রশ্নের জবাবে কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, প্রথমত, বৃহস্পতিবার আমরা একটি বৈঠকে বসব। দুই কমিশনের যেসব সুপারিশ আছে সেগুলো বিস্তারিত নিরীক্ষণ ও পরিষ্কারভাবে বোধগম্যের দরকার আছে।
এরপরই আমরা বাস্তবতার নিরীখে মানুষের জন্য উপকারী সুপারিশসমূহের বাস্তবায়ন শুরু করব। আর যত দ্রুত সম্ভব এটি করা হবে। ভিন্ন দুই কমিশনের সুপারিশ শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে কি না; এমন প্রশ্নের জবাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউ মিয়েন্ট সোয়ে বলেন, সব সুপারিশ সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষার পরই কেবল আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারব। পরিস্থিতি ও মানুষের জন্য উপকারী সব সুপারিশকেই আমরা প্রাধান্য দেব।
সরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুপারিশ বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার করেছে। কমিটি এ বাস্তবায়নের কাজ কখন শুরু করতে পারে বলে আপনি মনে করেন? তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। কমিটি গঠনের আগে আমি রাখাইনে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর এলাকা সফর করেছি। সাম্প্রতিক সহিংসতায় হিন্দু, ডাইংনেট, ম্রো ও কামান সম্প্রদায়ের অনেকেই নিহত হয়েছে। কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়াই আমরা রাখাইনের মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করব।