শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদ থেকে অব্যাহতি চাইলেন কক্সবাজারের রামু সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম। তিনি কলেজে অনুপস্থিত থাকায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও কলেজের স্টাফরা অধ্যক্ষের কক্সবাজারস্থ বাড়িতে গিয়ে অব্যাহতি পত্রে সই নিয়ে আসেন।
এদিকে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে অধ্যক্ষ ও অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ফলে সকাল ১১ টা থেকে প্রায় ৫ ঘন্টা মহাসড়কে পর্যটকবাহি দুরপাল্লার বাসসহ শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এতে জনসাধারণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিকাল পৌনে চারটার দিকে তিনি অব্যাহতি পত্রে সই করার পর সড়কে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
অব্যাহতির বিষয়টি নিশ্চিত করে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিকালের দিকে তিনি অব্যাহতিপত্রে সই করলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়।
ইউএনও আরও জানান, সোমবারের মধ্যে তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ করবেন এমন একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন গত বুধবার। এর মধ্যে তিনি বদলীর আবেদনের একটি কপি আমার কাছে পাঠালেও শিক্ষার্থীরা এটা সত্য নয় বলে নিয়ে বিতর্ক তুলেন। তারা বদলি নয় অব্যাহতি পত্রে সই করার দাবি দেন। বিকালের দিকে দাবি পূরণ হলে তারা অবরোধ তুলে নেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মো. জুনায়েদ জানান, গত বুধবার মহাসড়ক অবরোধ করা হলে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশেদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় তার কাছে একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে সোমবারের পদত্যাগের ঘোষনা দেন অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম। কিন্তু আজ ( সোমবার) তিনি কলেজেও আসেননি। মোবাইলও বন্ধ এমনকি বাড়ি ছেড়েও পালিয়ে যায়। পরে বিকালে এসে অব্যাহতি পত্রে সই করেন। এর আগে নতুন অন্তর্র্বতীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে কলেজে অনুপস্থিত।
শিক্ষার্থী মোরশেদ আলম বলেন, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এই অধ্যক্ষের অনিয়ম দুর্নীতির খবর বাংলানিউজসহ প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইনের অন্তত ৩০ টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রনালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পৃথক তদন্ত কমিটিও হয়েছে আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে এবং তদন্ত কমিটির লোকজনকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে নিজের অনিয়ম দুর্নীতি ধামাচাপা দিয়েছেন অধ্যক্ষ।
শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যক্ষ মুজিবুল আলম সোমবার সকাল ১০ টার মধ্যে পদত্যাগের কথা। কিন্তু তিনি আজও কলেজে আসেননি। এর মধ্যে অধ্যক্ষ নিজেই বদলীর জন্য আবেদন করেছেন জানিয়ে সেই আবেদনের একটি কপি তাদের কাছে পাঠান। এ আবেদনে নানা অসংগতি রয়েছে। এছাড়াও এটি আদৌ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে কিনা তা নিয়ে তাদের কাছে সন্দেহ তৈরী হয়েছে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুপ্রতীম বড়ুয়া জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ মুজিবুল আলমের সই করা অব্যাহতি পত্রটি দাপ্তরিক নিয়ম মেনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।