মোঃ শহিদ, উখিয়া::
[caption id="attachment_126214" align="alignnone" width="1000"] আবারো বিয়ের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা : ৫৭ রোহিঙ্গা আটক / ছবি, মোঃ শহিদ, উখিয়া[/caption]
মালয়েশিয়া পাচারের সময় উখিয়ার সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা থেকে ট্রলারসহ মানবপাচারকারী চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১৫।
এর মধ্যে নারী শিশুসহ ৫৭ জন রোহিঙ্গা ও ১ জন স্থানীয় নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব-১৫ গোয়েন্দা তথ্যের জানতে পারে যে, কক্সবাজার এলাকায় দির্ঘদিন ধরে মানব পাচারকারীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে প্রলোভন এবং প্ররোচনার মাধ্যমে চাকুরী দেওয়ার নাম করে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে পাচার করে আসছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে মানব পাচারকারীদের
আইনের আওতায় আনার নিমিত্তে বিভিন্ন এলাকায় র্যাব এর গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-১৫ এর আভিযানিক দল জানতে পারে যে, কতিপয় মানবপাচারকারী চক্র উখিয়ার ভিন্ন পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া পাচার করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫ এর একটি চৌকা আভিযানিক শুক্রবার রাত সাড়ে ৩ টার দিকে গভীর সমুদ্র এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধিসহ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের পর্যায়ে একটি মাছ ধরার ট্রলার আটক করে তল্লাশী অভিযান শুরু করে। তল্লাশীর একপর্যায়ে ট্রলারের ডেকের নিচে বিশেষ কায়দায় জিম্মি করে রাখা অবস্থা হতে ৩৫ জন নারী ও শিশু এবং ২৩ জন পুরুষ (৫৭ জন রোহিঙ্গা ১ জন বাংলাদেশি নাগরিকে উদ্ধার করে।
উক্ত মানবপাচারের সাথে জড়িত ২ জন সক্রিয় দালালকে আটক করে, আটকৃতরা হলেন কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার বাগমারা গ্রামের মোঃ আবুল কাসেমর ছলে মোঃ সোহেল ৩২ ও ককসবাজার পৌরসভার পাহাড়তলী গ্রামের সিরাজুলহকের ছেলে মুছা কলিমুল্লাহ।
উদ্ধারকৃত ভিকটিমরা জানায়, স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের উচ্চ বেতনে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত করানোর নিমিত্তে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে তাদের রাজি করিয়ে ৫০-৫৫ হাজার টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে। প্রাথমিক অবস্থায় তারা ভিকটিমদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে গ্রহণ করে এবং বাকী টাকা মিয়ানমার-টেকনাফ সীমান্তে অবস্থানরত জাহাজে ওঠার সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পরিশোধ করবে মর্মে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ভিকটিমরা মানব পাচারকারীদের প্ররোচনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে। স্থানীয় দালালরা ৪-৫ জন করে টেকনাফে হাফিজপাড়া পাহাড়ী এলাকায় ৫০ ৬০ জনকে একসাথে জড়ো করে। অতঃপর তারা মাছ ধরা ট্রলারের মাধ্যমে ভিকটিমদের টেকনাফ-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থানরত জাহাজে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে রওনা করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া পাচারের মিথ্যা প্রলোভন দেখায়। অতঃপর ভিকটিমদের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী টাকা গ্রহণ করে মালয়েশিয়া পাঠানোর নাম করে টেকনাফ-মিয়ানমার সীমান্তে জাহাজে অবস্থানরত দালালদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে কক্সবাজার র্যাব -১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মোঃ বিল্লাল উদ্দিন জানিয়েছেন।