সামাজিক উদ্যোগ কথাটির মানে হলো- প্রতিটি নাগরিক তাঁর সাধ্যানুযায়ী কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করবে, যা সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলোকে সহযোগিতা করবে। এই ধরণের উদ্যোগের জন্য বাইরের কারো সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত নয়। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের এ জাতীয় সামাজিক উদ্যোগ প্রয়োজন। গত পরশু দুটি পত্রিকায় আমি দুটি খবর পড়েছি।
একটি খবর ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার আনাদবাগ নামে একটি গ্রামের। গ্রামবাসী গ্রামের প্রতিটি প্রবেশ পথে নিজেরা পাহারা বসিয়েছেন, গ্রামে কেউ ঢুকতে চাইলে তাঁকে জীবানুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করে এবং স্যানিটাইজার দিয়ে আগন্তুককে হাত পরিষ্কার করতে বলে। তারা সমস্ত গ্রামবাসীর মধ্যে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের বিষয়ে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রামবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছে।
আর একটি খবর লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ এলাকার। আমি কিছুদিন সেখানে কাজ করেছি। একজন গর্ভবতী মা তার তৃতীয় সন্তানের জন্মদানের অপারেশন করতে চন্দ্রগঞ্জে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে কোনও ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন না।
তারা লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ গাফফারের কাছে এই দুর্দশার কথা জানান। ডাঃ গাফফার লক্ষ্মীপুর সেই রোগীকে শহরে ডেকে না এনে বরং নিজেই জেলা শহর থেকে চানগরগঞ্জ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং তিনি সফলভাবে সেই সার্জারি করেন।
আমরা আমাদের গ্রামবাসীদের সকলকেই আনন্দবাগের মতো হওয়ার জন্য আহবান জানাই।
আমাদের সকল ডাক্তারকে মিঃ গাফফারের মতো হওয়া উচিত। বাংলাদেশী হিসেবে আমরা এধরণের সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণের প্রচুর উদাহরণ পেয়েছি, যে কোনও সঙ্কট মোকাবেলায় এই ধরণের উদ্যোগ আমাদের সামাজিক শক্তি।
আমরা রানা প্লাজা ধসে পড়ার পর, এবং উপকূলীয় মানুষ ৭১, ৯১ ও ৯৭ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এই ধরনের সামাজিক উদ্যোগ দেখেছি।
আসুন, আমরা আমাদের সামাজিক উদ্যোগগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করি।
আমাদের সামাজিক শক্তিগুলো নিয়ে আমাদের আবার গর্ব করা উচিত।
রেজাউল করিম চৌধুরী
নির্বাহী পরিচালক
কোস্ট ট্রাস্ট।