প্রকাশিত: ২৫/১১/২০১৬ ৭:৪৫ এএম

নিউজ ডেস্ক::

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের (সাবেক আরাকান রাজ্য) মংডু জেলা। ৬৩ কিলোমিটার লম্বা আন্তর্জাতিক এ নাফ নদী দুই দেশকে আলাদা করেছে। তবে মিয়ানমার সীমান্ত কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা।
গত কয়েক দিনে নাফ নদী অতিক্রম করে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান টেকনাফ ও উখিয়ায় ঢুকেছে। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ধারণামতে, অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা কমপক্ষে আট হাজার। তারা আশ্রয় নিয়েছে দুই উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়, জঙ্গল ও রোহিঙ্গা বস্তিতে।
রোহিঙ্গাদের দাবি, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) জন্যই তাদের (রোহিঙ্গাদের) বিরুদ্ধে ‘সাঁড়াশি উচ্ছেদ অভিযান’ চালাচ্ছে সেখানকার মগ ও বর্মি সেনারা। এ কয়েক দিনে সেখানকার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও রাখাইন সেনারা মংডু শহরের আশপাশের প্রায় ১৭টি রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত গ্রামের ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের গুলিতে বহু রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু হতাহত হয়েছে। রোহিঙ্গা মেয়েদের ধরে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। এসব করে রোহিঙ্গাদের রাখাইন রাজ্য ত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ৯ অক্টোবর ভোরে রাখাইন রাজ্যের সীমান্তের কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িতে সন্ত্রাসী হামলা হয়। এতে ৯ পুলিশসহ ১৪ জন নিহত হয়। মূলত এরপর থেকেই সেখানে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিজিপি। মিয়ানমার সরকার পুলিশ ফাঁড়িতে সন্ত্রাসী হামলার জন্য দায়ী হিসেবে যে সংগঠনকে শনাক্ত করেছে দাবি করেছে, সেটির নাম ইকামুল মুজাহিদীন। অবশ্য নতুন এই সংগঠনটিও ইতিমধ্যে নিজেদের বক্তব্য সংবলিত একাধিক ভিডিও অনলাইনে ছেড়েছে।
গত বুধবার কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের (বিজিপি ও বিজিবি) পতাকা বৈঠকে বিজিপি মংডু ১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার (উপপরিচালক) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরা সন লিন বলেছেন, ৯ অক্টোবরের ওই হামলার পর থেকেই সেখানে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিজিপি। এতে রোহিঙ্গাদের কিছু ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। বেসামরিক লোকজনও হতাহত হয়েছে। আর ভয়ে ও আতঙ্কে কিছু রোহিঙ্গা নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করছে।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে বৈঠকে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বদানকারী বিজিবির চট্টগ্রাম দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খন্দকার ফরিদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের একাধিক পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার জন্য বিজিপি একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দায়ী করছে। গোষ্ঠীর সদস্যদের ধরার ব্যাপারে তারা আমাদের (বিজিবি) সহযোগিতা চেয়েছে।’
পুলিশ ও বিজিবি সূত্র জানায়, গত ১২ মে রাতে সন্ত্রাসীরা টেকনাফের নয়াপাড়া আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ১১টি অস্ত্র ও ৬৭০টি গুলি লুট করে। এ সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আনসার কমান্ডার আলী হোসেন নিহত হন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার নুরুল আবছার আদালতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, মিয়ানমারের জঙ্গি সংগঠনের (আরএসও) জন্য অস্ত্র লুট করতে আনসার ক্যাম্পে হামলা হয়েছিল।
সীমান্তে কড়াকড়ি, অনুপ্রবেশ প্রায় বন্ধ: গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নাফ নদীর নেটং পাহাড়ে উঠে দেখা গেছে, ওপারে সীমানায় তিনটি লোকবোঝাই নৌকা ভাসছে। এপারে দাঁড়িয়ে বিজিবি ও পুলিশ নৌকাগুলো নজরদারি করলেও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীরা নৌকাগুলোকে বাধা দিচ্ছে না। নৌকার কয়েক শ মিটার দূরেই আছে বিজিপির একটি ছাউনি।
বিজিবির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সদস্য বলেন, আগে রাতের আঁধারে কিছু রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটলেও এখন তার সুযোগ নেই। সুত্র: প্রথম আলো

পাঠকের মতামত

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ছাড়া মিয়ানমারে শান্তি স্থায়ী হবে না

পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান ছাড়া মিয়ানমারে স্থায়ী শান্তি ও ...

পারকি সৈকতে ধরা ২৫ ভাসানচর থেকে পালাচ্ছেন রোহিঙ্গারা!

নোয়াখালীর ভাসানচরের আশ্রয়শিবির থেকে কৌশলে রোহিঙ্গারা পালিয়ে যাচ্ছেন! প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাব, আত্মীয়-স্বজনের কাছে যাওয়ার বাহানা, ...

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কক্সবাজারে সংবাদ সম্মেলন

জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদদের নিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক কটাক্ষ ও ব্যাঙ্গাত্মক কন্টেন্ট বানিয়ে অপপ্রচার ...