বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের গুলিতে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই) কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী নিহতের ঘটনায় মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আমির আতাউল্লাহ জুনুনীসহ ৫১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইনের আদালত এই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক।
বান্দরবান কোর্ট ইন্সপেক্টর একে ফজলুল হক এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় ৫১ জনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণ করেছে আদলত। এঘটনায় আটক ৯ জন কারাগারে রয়েছে। বাকি পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিজ্ঞ আদালত।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের কাছে মাদকবিরোধী অভিযানে নামে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ডিজিএফআইয়ের বিশেষ একটি দল। এ সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন রিজওয়ান রুশদী। গুলিবিদ্ধ হন র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সদস্য সোহেল বড়ুয়া। গুলিতে শূন্যরেখার আশ্রয় শিবিরের রোহিঙ্গা তরুণী সাজেদা বেগমও (২০) নিহত হন।
এ ঘটনায় ২৩ নভেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ডিজিএফআই কক্সবাজার কার্যালয়ের মাঠ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিকে প্রধান আসামি করে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয় আরও ৩৫ জনকে।
এ বছর ১৩ নভেম্বর মামলার কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মাহাফুজ ইমতিয়াজ ৫১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা মাহাফুজ ইমতিয়াজ জানান, এ মামলায় ইতিমধ্যে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে আসামীদের অনকে মিয়ানমারে পালিয়ে থাকায় গ্রেপ্তার করতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলায় আরসার প্রধান কমান্ডার আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি ছাড়াও শূন্যরেখার আশ্রয়শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান মাস্টার দিল মোহাম্মদ, সেক্রেটারি মৌলভি আরিফ, আরসা কমান্ডার ওস্তাদ খালেদ, মাওলানা মোস্তফা, আবদুর রহমান, আরসার সদস্য জুবায়ের, শাকের কাউসার, নোমান চৌধুরী, জিন্নাত উল্লাহ, লাল মোহাম্মদ, হাফিজ নুর, রহিম উল্লাহ, মৌলভি আজিজের নামও রয়েছে।