প্রকাশিত: ২৬/১০/২০১৬ ৮:০৬ পিএম

এম.বশিরুল আলম,লামা(বান্দরবান)::

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) দ্বারা নির্মাণাধীন দুইটি বিদ্যালয়গুলোতে নির্মাণ কাজে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। পিইডিপি-৩ এর অর্থায়নে এসব বিদ্যালয় নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ এনে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি (এসএমসি) ও স্থানীয় লোকজন লিখিত অভিযোগ করলেও আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

প্রাপ্ত অভিযোগে প্রকাশ, উপজেলার অসতি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণে আলীকদম এলজিইডি গত ৯ জুন টে-ার আহ্বান করে। এ বিদ্যালয়ের প্রাক্কলিত নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মার্মা এন্টারপ্রাইজের লোকজন কাজের শুরুতেই খোয়ার জন্য নিন্মমানের ইটের আধলা মজুত করেন। বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষ দখল করে সিমেন্ট, রড ও মালামাল রাখেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, ভবনের ব্যাজের সলিং, ৩ ইঞ্চি সিসি ডিজাইনে থাকলেও তা করা হয়নি। বিদ্যালয়ের ভিত্তিতে ১৫ ইঞ্চি পুরুত্বের জায়গায় ১০-৮ ইঞ্চি ঢালাই করা হয়েছে। ব্যাজের ডিজাইন মোতাবেক দৈর্ঘ্য ও প্রস্ত মাপ ঠিক নেই। আরসিসি ঢালাইতে কংক্রিট মিশ্রণের অনুপাত ১ঃ২ঃ৪ স্থলে ১ঃ৬ঃ১২ করা হয়েছে। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে মানহীন খোয়া। তাছাড়া নির্মাণ কাজে যেসব রড ব্যবহার করা হচ্ছে তা মানসম্মত নয়।

এসএমসির সভাপতি মো. ওসমান গনিসহ ৩৭ জন এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ভবনের লে-আউট দেওয়ার সময় এসএমসিকে অবহিত করা হয়নি। নির্মাণ শ্রমিক থাকার এবং নির্মাণ সমগ্রী রাখার জন্য বিদ্যালয়ের ক্লাসরূম দখল কয়ে নেয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখায় বিঘœ হচ্ছে।

একই অভিযোগ, আমতলী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রেও। পৃথক অভিযোগে এসএমসি সভাপতিসহ ৩৩ জন এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত অভিযোগে বলা হয়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মি.ইউটি মং এর লোকজন এ বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলার কাজ শুরু করেন কমিটির অনুমতি ছাড়াই। স্থানীয় ব্রিকফিল্ড থেকে অতিনিন্মমানের আধলা নিয়ে খোয়া করে পিলার ও সিঁডি ঢালাইয়ে ব্যবহার করা হয়। নির্মাণ শ্রমিকরা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া স্কুলমাঠের কর্ণারে স্থাপিত ওয়াশব্লকটি ভাঙ্গলে এর প্রতিবাদ করায় ঠিকাদার প্রতিনিধি আবুবক্করের ইন্ধনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাঁদাদাবীর অভিযোগ আনা হয়। পরে ওই প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্চিতও করা হয়।

স্থানীয় অভিযোগ করেন, এলজিইডি থেকে সঠিকভাবে কাজগুলো তদারকি করা হচ্ছে না। অভিযোগ দেওয়ার পরও বিষয়টি আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা প্রকৌশলী হেলালুর রহমান বলেন, অভিযোগ সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পর ঠিকাদারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের দখল করা শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। নিন্মমানের খোয়া মজুদের বিষয় স্বীকার করে তিনি বলেন, সেগুলি অপসারণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মইনু মার্মা বলেন, অসতি পাড়া স্কুলের কাজটি আমার পার্টনার করতেছে। স্কুলের ক্লাসরূম দখল করে মালামাল রাখার বিষয়টি আমি জানি না। কেউ করে থাকরে ঠিক করেনি। মি. ইউটি মং বলেন, আমার কাছ থেকে স্থানীয় একজন ঠিকাদার কাজটি কিনে নেন। তবে নিয়মমাফিক কাজ না করলে এটি আমি খতিয়ে দেখবো। তাছাড়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সে সম্পর্কে আমরা জানি না।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের তিন দিনব্যাপী কর্মশালা শুরু

কক্সবাজারে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের আয়োজনে শুরু হয়েছে ’আবহাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন ও জনস্বার্থ সাংবাদিকতা’ শীর্ষক তিনদিনব্যাপী ...

ফ্যাসিবাদ ও বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন করুন : টেকনাফে মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোঃ শাহজাহান বলেছেন, ফ্যাসিবাদ ও বৈষম্যমুক্ত ব্যতিক্রমধর্মী বাংলাদেশ ...