সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও::
কক্সবাজার সদর ইউপি নির্বাচনের ৬ষ্ঠ ও শেষ ধাপের ভোট গ্রহণ ৪ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ের ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। নির্বাচন অফিস মনোনয়ন পত্র গ্রহণ ও যাচাই বাছাই সম্পন্ন করেছে। আগামী ১৯ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিন ধার্য রয়েছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরের দিন প্রতীক বরাদ্ধ দেওয়া হবে বলে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।
শেষ ধাপের এ নির্বাচনকে নিয়ে ঈদগাঁওতে চলছে নানা হিসেব নিকেশ। তাদের মতে, ঈদগাঁওর ৬ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মধ্যে চলছে অন্তঃকোন্দল। দীর্ঘ আন্দোলন পাড়ি দিয়ে বিএনপির অবস্থান নিষ্ক্রিয় থাকলেও চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী নেই।
অপরদিকে ইসলামাবাদ ইউনিয়নে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। তবে সুকৌশলে এগুচ্ছে জামায়াত ও জাসদ। এদিকে ৬ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের পক্ষে ৬জন নৌকার মাঝিকে একক মনোনয়ন পত্র দেওয়া হলেও ৫ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। পাশাপাশি বিএনপি ও তাদের একক প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। জামায়াত ইসলাম কয়েকটি ইউনিয়নে প্রার্থী না দিলেও ইসলামাবাদ, ইসলামপুর, ঈদগাঁও, জালালাবাদ ইউনিয়নে একক প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে।
অপরদিকে জাসদের (ইনু) ঈদগাঁও জালালাবাদ ইউনিয়নে প্রার্থী দিয়েছে। তাছাড়া স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দলের প্রার্থী রয়েছে এ ৬ ইউনিয়নে। সেক্ষেত্রে এ নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা দাড়াল চেয়ারম্যান পদে ৫১ জন, সংরক্ষিত আসনে ৭৪ জন, সাধারণ পদে ২৮০ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছে। এদিকে উপজেলা নির্বাচন অফিস ৬ ইউনিয়নে সুষ্ঠু ও অবাধ শান্তিপুর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছে।
স্থানীয় প্রার্থী ও ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৬টি ইউনিয়নে নৌকার মাঝিরা অনেকটাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। কারণ হিসাবে তারা জানান, বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলে বৃহত্তর ঈদগাঁওকে উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে এনেছে।
ডিসি সড়ক সংস্কার, অবহেলিত উপকূল বাসীর জীবন রক্ষার্থে বেড়ীবাঁধ নির্মাণসহ গ্রামীন সড়কের সংস্কার ও কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতায়নের আওতায় নিয়ে মানুষের মন জয় করেছে। বর্তমান মহাজোট সরকার ঈদগাঁওর উন্নয়নের জন্য অনেক কিছু করে যাচ্ছে বলেও জানান তারা। তাই আওয়ামীলীগের প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করে প্রত্যেকটি এলাকায় এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জনগণ তাদেরকে বিজয়ী করবেন বলে নৌকার মাঝিদের প্রত্যাশা।
অপরদিকে ৬ ইউনিয়নের ৫টির মধ্যে রয়েছে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। তাদের অভিযোগ নব্যলীগার, হাইব্রিড ও সুবিধাভোগীদের মনোনয়ন দিয়ে ত্যাগী ও প্রকৃত নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। তাই তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে থাকবেন।
তারা আরো জানান, যুদ্ধাপরাধীদের দোসর জামায়াতের সাথে সরকারী দলের কতিপয় নেতা আঁতাত করে এ নির্বাচনে তাদের নিজ স্বার্থ হাসিল করেছে। এমনকি তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মতামতের প্রাধান্য না দিয়ে জনবিচ্ছিন্ন প্রতিনিধিকে নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছে। তাই আওয়ামীলীগের ঐতিহ্য ও উন্নয়ন সমুন্নত রাখতে আমরা এ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে অংশগ্রহণ করছি।
স্থানীয় সচেতন তরুণ ভোটারদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এ ৬ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের অন্তঃকোন্দলের কারণে ৪টি ইউনিয়নে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও বাকীগুলিতে তাদের অবস্থান নাজুক। আ’লীগে দলীয় কোন্দলের কারণে ঈদগাঁওয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দাপটে রয়েছে। তার কারণ হিসাবে সরকারী দলের কতিপয় নেতাকে দুষলেন তারা।
সরকারী দলের মদদে জামায়াত আজ সুসংগঠিত দলে পরিণত হচ্ছে। তারা সরকার ও দেশ বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ড চালালেও সরকারের ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীদের মধ্যে যেন দায়সারা ভাব। পাশাপাশি তারা সরকারী দলের প্রতি আহবান জানান দলীয় কোন্দল ও ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে অংশগ্রহণের।
এদিকে ৪ জন অনুষ্ঠিতব্য ঈদগাঁওর ৬ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে সংঘবদ্ধ অস্ত্রধারী ও সন্ত্রাসী বাহিনী তৎপর হয়ে উঠেছে। তাদের তালিকা করে গ্রেফতারের দাবী জানান সচেতন ঈদগাঁওবাসী।