স্বপ্ন ছিল মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। আর এ স্বপ্ন পূরণে চার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন গিনির ২৫ বছর বয়সী এক যুবক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়টির আল–শরিফ ইনস্টিটিউটে পূর্ণকালীন বৃত্তি নিয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন ২৫ বছর বয়সী মামাদৌ সাফায়ৌ ব্যারি। স্বপ্ন পূরণে বিভিন্ন দেশের প্রতিকূল আবহাওয়া ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই চার মাস সাইকেল চালিয়েছেন মামাদৌ।
গিনির এ যুবক বিবিসিকে বলেন, মিসরে উড়োজাহাজ দিয়ে আসার মতো অর্থ তাঁর কাছে ছিল না। তবে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ ছাড়তে চাননি তিনি। আর এই স্বপ্ন পূরণ করতে মামাদৌ সাইকেলে চেপে মালি, বুরকিনা ফাসো, টোগো, বেনিন, নাইজার পার হয়ে চাদে গিয়ে পৌঁছান।
এ দীর্ঘ পথ ভ্রমণের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে ২৫ বছর বয়সী মামাদৌ বলেন, মালিতে আমি আইএস জঙ্গিদের বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা করতে দেখেছি। এসব দেশ অতিক্রম করা এত সহজ ছিল না। মালি এবং বুরকিনা ফাসোতে সেনা অভ্যুত্থানের কারণে স্থানীয় জনগণ ভীত ছিল। সেখানে অনেক সেনাবাহিনো ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র দেখেছি।
মিসরে আসতে গিয়ে বুরকিনা ফাসো ও টোগোতে তিনবার গ্রেপ্তারও হতে হয়েছে বলে জানান মামাদৌ। পরে চাদে পৌঁছানোর পর এক সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দেন তিনি, যা পরে ভাইরাল হয়। এরপর এক সন্তানের জনক মামাদৌকে অনেকেই সাহায্য করতে চান। সেখান থেকে উড়োজাহাজে করে মিসরে আসার সুযোগ পান তিনি। ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান পাড়ি দিতে হয়নি মামাদৌকে। তিনি বলেন, পূর্ণকালীন বৃত্তির সুযোগ পেয়ে আমি খুব, খুব খুশি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।
গত ৫ সেপ্টেম্বর কায়রোতে পৌঁছানোর পর আল–শরিফ ইনস্টিটিউটের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ডিন ড. নাহলা এলসিডির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মামাদৌ। তিনি এখন এই বিভাগেই ভর্তি হয়েছেন।
মামাদৌর এ সফরের বিষয়টি তুলে ধরে এলসিডি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, আল আজহার সব দেশের শিক্ষার্থীদের বরণ করে,তাঁদের যত্ন নেয়।