মাঠে নেমে পড়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা
আসন্ন কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন : দলীয় মনোনয়নের দিকে তাকিয়ে মেয়র প্রার্থীরা
সর্বত্র আলোচনায় এখন পর্যটন নগরী কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই হয়েছিল কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচন। সেই নির্বাচনে নৌকি প্রতীক নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রথম বারের মত পৌর মেয়র নির্বাচিত হন। সেই হিসাবে ৫ বছর মেয়াদের ১৫ দিন পূর্বে হচ্ছে এবারের নির্বাচন।
গত ৩ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন সচিব মো: হুমায়ন কবির খন্দকার কক্সবাজার পৌরসভা সহ ৫ টি পৌরসভার নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযাযী প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৬ মে, বাছাই ১৮ মে, প্রত্যাহার ২৫ মে এবং ভোট গ্রহন ১২ জুন।
এদিকে তফসিল ঘোষনা হওয়ার পর থেকে এরই মধ্যে কক্সবাজার পৌর এলাকা ছাড়াও জেলা সর্বত্র আলোচনা চলছে গুরুত্বপূর্ন এই পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা নিয়ে মুখ খুলছেন অনেকে, আবার অনেকে দলীয় সমর্থন এবং নানান হিসাবে নিকাশ করে মাঠে নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্য দিকে পিছিয়ে নেই কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে আগ্রহী প্রার্থীরা। বর্তমান কাউন্সিলরদের সাথে এবাব পাল্লা দিয়ে মাঠে নামতে প্রস্তুত বেশ কয়েকজন নতুন মুখ।
মেয়র পদে নির্বাচনের নাম আসলে সবার আগে নাম আসছে বতর্মান মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের। কারণ আবারো যেহেতু দলীয় মনোনয়নে নির্বাচনে হবে তাতে অবশ্যই অনেকটা এগিয়ে আছেন মুজিবুর রহমান। কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের অনেক শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যেহেতু বর্তমান মেয়র মুজিবুর রহমানের আমলে কক্সবাজার পৌরসভার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরো অনেক উন্নয়ন অপেক্ষা করছে। তাই দলীয় মনোনয়ন মুজিবুর রহমান পাবে সেটা অনেকটা নিশ্চিত। তাই মেয়র মুজিবুর রহমানের বিকল্প আপাতত নেই।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, আমি পৌরবাসীর জন্য কি করেছি সেটা পৌরবাসী বিবেচনা করবে। আর দলীয় মনোনয়নের জন্য আমার চেষ্টা তো থাকবেই। আমি বিশ^াস করি দলীয় মনোনয়ন আমিই পাব। ভবিষ্যতে আমার অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ শেষ করে কক্সবাজার পৌরসভাকে বাংলাদেশের একটি উন্নত আদর্শ পৌরসভা হিসাবে গড়ে তুলতে চাই।
এদিকে এরই মধ্যে মেয়র নির্বাচন করার ঘোষনা দিয়েছেন কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র নুরুল আবছার। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিনের পৌরবাসীর প্রাণের মানুষ, সাধারণ মানুষরা এখনো আমাকে চায়। তাই আমি অবশ্যই দলীয় মনোনয়ন চাইবো। আর যদি মনোনয়ন না পায় তাহলে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেব।
এদিকে এবারের পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়ন চাইতে পারেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি কক্সবাজার পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান মরহুম একেএম মোজাম্মেল হকের বড় ছেলে মাশেদুল হক রাশেদ।
এদিকে কক্সবাজার পৌরসভার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সাবেক পৌর মেয়র সরওয়ার কামাল বলেন, আমি স্পষ্ট বলতে চাই গতবারের মত ভোটের অধিকার হরণ করে নির্বাচনের নামে প্রহসন হলে নির্বাচনে আসার প্রশ্নই আসেনা। আমি নির্বাচনের পরিবেশ বুঝে সাধারণ মানুষের মতামত নিয়ে সর্বদলীয় নাগরিক পরিষদের ব্যানারো নির্বাচন করার চিন্তায় আছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাকে অনেকে জামায়াতের প্রার্থী বলে। কিন্তু জামায়াত নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনই নাই। সেখানে জামায়াতের প্রার্থী হওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি অতীতেও কোন দিন জামায়াতের ব্যানারে নির্বাচন করিনি, নাগরিক পরিষদের ব্যানারেই নির্বাচন করলে করবো না হয় করবো না।
এ ব্যাপারে মেয়র পদে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক আবদুল খালেক বলেন, আমি শেখ হাসিনার দলীয় কর্মী। তাই মেয়র পদে মনোনয়ন অবশ্যই চাইবো, যদি দল আমাকের উপযুক্ত মনে করে মনোনয়ন দেয় তাহলে নির্বাচন করবো না হলে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবো।
এদিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. মোহাম্মদ তারেক বলেন, আমাদের দল জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচন মুখি দল। আমরা অবশ্যই পৌর নির্বাচনে অংশ নেব। সেটা নিয়ে দলীয়ভাবে এখনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি, তবে এটুকু বলতে পারি আমাদের ভাল প্রার্থী আছে।
পৌর নির্বাচন নিয়ে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. শামীম আরা স্বপ্না বলেন, পৌর নির্বাচন নিয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে নির্বাচনের পরিবেশ আদৌ আছে কিনা সেটা প্রশ্ন রাখেন তিনি।
এদিকে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন বেশি জমিয়ে তুলেছেন প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রাথীরা। এরই মধ্যে পৌরসভার ১২ টি ওয়ার্ডের অন্তত শতাধিক নতুন পুরাতন কাউন্সিলর প্রাথী মাঠে নেমে পড়েছেন। তার মধ্যে পুরাতনদের সাথে পাল্লা দেওয়ার দেওয়ার বেশ কয়েকজন নতুন প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। এছাড়া নারী কাউন্সিলর পদেও বেশ কয়েকজন নতুন মুখ মাঠে নেমে গেছেন। তারা এরই মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে বৈঠক সহ যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন বলে ভোটারদের মাধ্যমে জানা গেছে।
এদিকে আসন্ন পৌর নির্বাচন নিয়ে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা বেশি কিছু না, জনবান্ধব এবং নাগরিক সেবা পেতে হয়রানী না হয় এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করতে চান সাধারণ মানুষ। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার
পাঠকের মতামত