উখিয়া নিউজ ডেস্ক:: গ্রাম পুলিশদের উদ্দেশে জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেছেন, ‘আসরের নামাজের পর বিভিন্ন মসজিদে যে বয়ান হয় সে বিষয়ে আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। সেখানে কি বলা হচ্ছে সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে।’
শনিবার সকাল ১১টায় ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে গ্রাম পুলিশ’ শীর্ষক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। সমাবেশে জেলার থানাগুলোতে দায়িত্বপালনরত প্রায় ১৫’শ এর অধিক গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার-দফাদার) অংশ নেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন।
সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়নে ৯ জন করে গ্রাম পুলিশ কর্মরত আছেন। সে হিসেবে জেলায় ১৫’শ এর অধিক গ্রাম পুলিশ রয়েছেন। এই ১৫’শ লোক যদি আমাদের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করেন তাহলে এটা একটি বড় শক্তি হবে।’
সন্দেহজনক কিংবা বহিরাগত কাউকে এলাকায় দেখলে স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন, মিসড কল অথবা এসএমএস দিয়ে জানানোর জন্য তিনি গ্রাম পুলিশদের অনুরোধ করেন।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ব্যক্তিগত কাজ না করার অনুরোধ জানিয়ে গ্রাম পুলিশদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা আইনশৃঙ্খলা কাজে চেয়ারম্যান-সদস্যদের সহায়তা করবেন, কিন্তু তাদের ব্যক্তিগত কাজ করবেন না। এটা আপনাদের জন্য অবমাননা।’
এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। কোনো জঙ্গিবাদ, পেট্রোলবোমা আর রগকাটার মধ্যে দিয়ে ইসলাম ধর্ম প্রসারিত হয়নি। ইসলাম ধর্ম প্রসারিত হয়েছে তার শান্তিপ্রিয় কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু আজ সেই ইসলাম ধর্ম বিতর্কিত হয়ে গেছে গুটিকয়েক নামধারী সন্ত্রাসীর কারণে। আগে হুজুর দেখলে মানুষ সম্মান করতো, আজকাল সেভাবে করে না। সন্দেহের চোখে দেখে।’
তিনি বলেন, জঙ্গিদের জায়গা কোথাও নেই। এদের মানুষ ঘৃণা করছে। শোলাকিয়ায় নিহত জঙ্গির জানাজা পড়েছে শুধু একজন মানুষ। মর্গে পড়ে থাকা জঙ্গিদের মরদেহ নিতে পরিবারের কেউ আসছেও না। অথচ তারা বেহেশতে যেতেই মানুষ হত্যা করেছে। কিন্তু কোরআনে সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে নিরপরাধ লোককে হত্যা করে বেহেশতে যাওয়া যাবে না। তাই জঙ্গিদের দোজখেও জায়গা হবে না।
২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া সম্ভব মন্তব্য করে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, রাজনৈতিক হানাহানি দূর করতে পারলে আমরা ২০২১ সালে নয়, এর আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো।
জেলা প্রশাসক গ্রাম পুলিশদের উদ্দেশে বলেন, ‘সন্দেহজনক কাউকে দেখলেই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাবেন। স্থানীয় কোনো মেসের বাসিন্দাদের সন্দেহজনক মনে হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ওসি, চেয়ারম্যানকে জানাবেন। এটাকে ঝামেলা মনে করবেন না। এটা আপনার ঈমানি দায়িত্ব।’
উদাহরণ টেনে মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘ছাত্রশিবিরের ভাইয়েরা নিরপরাধ মানুষের রগ কেটে দিতো। শিবির না করলেই তা করতো। এরপর পেট্রোলবোমা দিয়ে অনেক মানুষকে পুড়ে মেরেছে তারা। চট্টগ্রামেই ৭৬ জন মানুষকে হতাহত করা হয়েছে। মৃতদের প্রায়ই নিরীহ মানুষ। তারা আওয়ামী লীগ করে না, বিএনপি করে না। শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাবার জন্য এসব নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ তারা এখন ইতিহাসের আস্তাকুড়ে।’