জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর আজ জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খানকে বাংলাদেশে শুভেচ্ছা দূত হিসেবে ঘোষণা করেছে।
পৃথিবী জুড়ে ইউএনএইচসিআর-এর এরকম ৩২ জন শুভেচ্ছা দূত আছেন; যাঁরা তাঁদের জনপ্রিয়তা, নিষ্ঠা ও কাজের মাধ্যমে সারা বিশ্বের শরণার্থীদের পরিস্থিতি ও ইউএনএইচসিআর-এর কাজ সবার সামনে তুলে ধরেন।
২০১৯ সাল থেকে তাহসান শরণার্থীদের কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার বিভিন্ন উদ্যোগে ইউএনএইচসিআর-এর সাথে একত্রে কাজ করে চলেছেন। তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন এবং বিশ্ব শরণার্থী দিবস ও আমাদের অন্যান্য অনুষ্ঠানের ইতোপূর্বে যুক্ত থেকে সহায়তা করেছেন। এসব কাজের মাধ্যমে তাহসান কক্সবাজারে শরণার্থীদের জন্য মানবিক কার্যক্রম সামনাসামনি দেখেছেন, কথা বলেছেন শরণার্থীদের সাথে, আর বাস্তুচ্যুতির মূল কারণগুলো সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
শুভেচ্ছা দূত হিসেবে নিযুক্তির ঘোষণার পর আজ তাহসান বলেন, “জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সাথে যুক্ত হতে পেরে আমি সম্মানিত ও গর্বিত বোধ করছি। ইউএনএইচসিআর সারা বিশ্বের শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুতদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে, জীবন-রক্ষাকারী সহায়তা দেয়, আর সংকট সমাধানের উদ্দেশ্যে কাজ করে। পৃথিবীর এক শতাংশেরও বেশি মানুষ – প্রতি ৯৭ জনে ১ জন – আজ সংঘাত ও নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত। ভাগ্যবান ৯৯ শতাংশ মানুষের একজন হিসেবে শরণার্থীদের হয়ে কথা বলা আমার মানবিক দায়িত্ব”।
ইউএনএইচসিআর-এর বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রতিনিধি স্টিভেন করলিস বলেন, “এটা সত্যিই আমাদের জন্য সম্মান ও গর্বের ব্যাপার যে তাহসান বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর শুভেচ্ছা দূত হতে সম্মত হয়েছেন। তিনি শুধু একজন মেধাবী সংগীতশিল্পী ও অভিনেতাই নন, তিনি শরণার্থীদের জন্য নিবেদিত একজন অসাধারণ মানুষ, যিনি বাংলাদেশে ও দেশের বাইরেও জনপ্রিয় ও সমাদৃত। আমি নিশ্চিত, তাহসান শরণার্থীদের অধিকার, কল্যাণ ও সুরক্ষার জন্য এক নতুন কন্ঠস্বর হয়ে কাজ করবেন”।
শরণার্থী ও বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত জনগণের সুরক্ষা, উপযুক্ত জীবনমান ও সংকটের কার্যকরী সমাধান অর্জনের লক্ষ্যে প্রচারণা চালান ও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ইউএনএইচসিআর-এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা দূত ও সমর্থক হিসেবে নিযুক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ শরণার্থী শিবির আজ বাংলাদেশের কক্সবাজারে, যেখানে প্রায় ৯০০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন।
গত ১৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর ৭০ তম বর্ষপূর্তি হয়। ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠার পর এখনও ইউএনএইচসিআর-এর কাজের প্রয়োজনীয়তা কোন উদযাপনের বিষয় নয়। তবে এটি আমাদের জন্য এক অনন্য সুযোগ - অতীতের কাজ ও বর্তমানের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভাবার আর ভবিষ্যতের জন্য অনুপ্রেরণা নেয়ার। বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর কাজ শুরু ১৯৭১ সালে – শরণার্থী বাংলাদেশীদের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা ও ৭০-এর দশকে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা প্রদান থেকে শুরু করে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের পর প্রায় ৭৪০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য সহায়তা প্রদান পর্যন্ত জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার বাংলাদেশে কার্যক্রম বিদ্যমান।