যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা-ইউএসএআইডি তাদের অধীন চলমান সব প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ অথবা স্থগিত করেছে। এতে আইসিডিডিআর,বির এসিটিবিসহ বিভিন্ন কর্মসূচির অধীনে কর্মরত দেড় সহস্রাধিক কর্মী চাকরি হারাতে বসেছেন। এরই মধ্যে আইসিডিডিআর,বি এসব কর্মীকে অব্যাহতিপত্র প্রদান করেছে। এসব কর্মীর একটি অংশ যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত ছিলেন। যারা বিভিন্ন হাসপাতালে যক্ষ্মা রোগীদের সেবা দিয়ে আসছিলেন। তাদের কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতে বলায় সারা দেশের যক্ষ্মা রোগীরা বিপাকে পড়েছেন।
আইসিডিডিআর,বির এসিটিবি কর্মসূচির কয়েকজন কর্মী জানান, আইসিডিডিআর,বির পক্ষ থেকে তাদের অব্যাহতি পত্র দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের নিয়মানুসারে কারও আর এক মাস কারও তিন পর থেকে অব্যাহতি কার্যকর হবে। আইসিডিডিআর,বির এই প্রকল্পটির (এসিটিবি) মেয়াদ ছিল ২০২৭ সাল পর্যন্ত। এই পরিস্থিতিতে প্রায় ১২শ কর্মী চাকরি হারাচ্ছেন। একই সঙ্গে দেশের বিপুলসংখ্যক যক্ষ্মা রোগী তাদের প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জানা গেছে, এই প্রকল্পের অধীনে ছয়টি বক্ষব্যাধি হাসপাতালের (ঢাকার দুটি, খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও সিলেটের একটি করে) এমডিআর (মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্রেন্স) রোগীদের নিবিড় চিকিৎসা দেওয়া হতো, যা এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৮০ জন এমডিআর যক্ষ্মা রোগী চিকিৎসা পেতেন।
তবে আইসিডিডিআর,বির একটি সূত্র জানিয়েছে, শুধু ইউএসএআইডি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার অর্থায়নে আইসিডিডিআর,বির যত কার্যক্রম পরিচালিত হতো, সেগুলো সবই একটি নির্বাহী আদেশে স্থগিত করা হয়েছে। এতে বিপুলসংখ্যক কর্মী চাকরি হারাতে বসেছেন।
এ প্রসঙ্গে আইসিডিডিআর,বির সিনিয়র ম্যানেজার (কমিউনিকেশন্স) এ কে এম তারিফুল ইসলাম খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্প ও গবেষণাগুলো পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখতে হচ্ছে। আমাদের সেবাগ্রহীতা, বিভিন্ন অংশীদার ও সহকর্মীদের অসুবিধার জন্য সহানুভূতি ও দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা আশাবাদী, পুনরায় আমাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারব।
গত ২৫ জানুয়ারি (শনিবার) ইউএসএআইডি বাংলাদেশ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। চিঠিতে অংশীদারদের ইউএসএআইডির অধীন সব চুক্তি, কার্যাদেশ, মঞ্জুরি, সহযোগিতামূলক চুক্তি কিংবা অন্য সব প্রকল্পের সব ধরনের কাজ বন্ধ বা স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে অংশীদারদের তাদের জন্য বরাদ্দ খরচ কমাতে সব যুক্তিসংগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পরবর্তী নির্দেশ (উল্লিখিত নির্দেশনা বাতিল করার) লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত অংশীজনদের তাদের কাজ আবার শুরু না করতে বলা হয়েছে।