কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়া এলাকায় ইয়াবা সরবরাহকারী মিনি ট্রাকটি (পিকআপ) রং পাল্টিয়ে পালানোর সময় আটক করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। ওই সময় চালকসহ সাথে থাকা এক নারী পালিয়েছে বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। ২৫ আগষ্ট সন্ধ্যায় বিমান বন্দর সংলগ্ন সমিতি পাড়া সড়কের বিয়াম স্কুলের সামনে থেকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার সহকারী উপ-(এএসআই) আল আমিনের নেতৃত্বে মিনি ট্রাকটি উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন।
জানা যায়, ২৪ আগষ্ট রাতে টেকনাফ-কক্সবাজার (শহীদ এটিএম জাফর আলম সড়ক) সড়ক থেকে একটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা গাড়িটিকে ধাওয়া করে। পরে প্রশাসনের নজর এড়াতে আশ্রয় নেয় শহরের সমিতিপাড়ায়। সেখানে স্থানীয় রং মিস্ত্রি করিম ও নাছিরের কাছে ট্রাকটির ব্লু কালার থেকে হলুদ ও সিলিভার কালার করা হয়। পরে বিষয়টি স্থানীয়রা আঁচ করতে পারলে কালার অসম্পূর্ণ অবস্থায় মিনি ট্রাকটি ভাড়া করা এক চালক দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। ওই সময় শহরের সমিতি পাড়া সড়কে স্থানীয় জনতার হাতে গাড়িটি আটকা পড়ে। পরে উপস্থিত লোকজন কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশকে খবর দিলে থানার উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) আল আমিনের নেতৃতে মিনি ট্রাকটি জব্ধ করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন।
ট্রাকটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ফিরোজা বেগম নামে এক নারী ও টেকনাফ পৌরসভার বাসিন্দা ইয়াবা ব্যবসায়ী খ্যাত হেলাল নামের ব্যক্তি ট্রাকটির মালিক বলে দাবী করে স্থানীয় লোকজনের সাথে নানা বাকবিতন্ডা করে। এই নারী.ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সসুরেন্স কোম্পানী লিঃ কক্সবাজার শাখার লেখা সম্বলিত একটি প্রাইভেট কার (নং-ঢাকা মেট্টো-গ-৩৯-৭৪৬৬) নিয়ে এসে মিনিট্রাকটির মালিকানা দাবী করনে বলে জানা গেছে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে এই নারী ও জনৈক চালকসহ মিনি ট্রাকটি বিয়াম স্কুলের সামনে সড়কের উপর রেখে পালিয়ে যায়। পরে মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের কাছে ফিরোজা নিজেও ওই ট্রাকারের মালিক দাবী করেন। খবর পাওয়া গেছে মিনি ট্রাকটির মালিক টেকনাফের হেলাল নামের এক যুবক। মিনি ট্রাকে রক্ষিত কাগজে দেখা যায় মিনি ট্রাকটি ঢাকা মিরপুর প্রাইম ব্যাংক শাখার মালিকানাধিন। গাড়িটির পূর্বের কালার ছিল নেভি ব্লো।
প্রাথমিকভাবে মালিক দাবীকারী হেলাল টেকনাফ পৌরসভা ইসলামবাদ এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে। আর ফিরোজা বেগম টেকনাফ পৌরসভার বাসিন্দা বর্তমানে শহরের টেকপাড়া চৌমুহনী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন বলে জানাগেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা, এই গাড়িটি সমিতিপাড়ায় ইয়াবা খালাস পরবর্তী কালার পাল্টিয়ে পালানোর পুরো ঘটনাটি রহস্যঘেরা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) আব্দু রহিম জানান, গাড়িটি থানা হেফাজতে রয়েছে।
এব্যাপারে টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল মজিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কক্সবাজার সদর মডেল থানা থেকে কাগজপত্র আসলে গাড়ি মালিক হেলালের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হবে।
কক্সবাজার শহর যানবাহন নিয়ন্ত্রণ শাখার ( ট্রাফিক বিভাগ) ইন্সপেক্টর (টিআই) বিনয় কুমার বড়–য়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোন যানবাহনের রং পাল্টাতে হলে বিআরটিএ বরাবর আবেদন করতে হয়। কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে গাড়ি রং পাল্টালে এটা অপরাধ। এ অপরাধে সংশ্লিষ্ট গাড়ির বিরুদ্ধে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা ও জরিমানার বিধান রয়েছে।
পাঠকের মতামত