সরওয়ার আলম শাহীন,উখিয়া নিউজ ডটকম::
ঈদকে টার্গেট করে উখিয়া উপজেলায় হুন্ডির বাজার জমজমাট। উপজেলার সর্বত্র প্রায় শতাধিক হুন্ডি চক্র আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজর এড়িয়ে অবৈধভাবে হুন্ডির টাকা লেনদেন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব হুন্ডি চক্রের একটি তালিকা পুলিশ প্রশাসনের কাছে থাকলেও প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হুন্ডি চক্রের সদস্যরা। আসন্ন ঈদে কয়েক কোটি টাকা বিতরণের টার্গেট নিয়ে চক্রটি মাঠে নেমেছে। হুন্ডি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অনলাইন মোবাইল সেবা বিকাশের বিরুদ্ধেও হুন্ডিসহ মাদক পাচারের অর্থ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা ছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক হুন্ডি সিন্ডিকেট অবাধে হুন্ডির টাকা লেনদেন করায় স্থানীয় রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাংকগুলো প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে সংশ্লিদের অভিমত।
সূত্রে জানা গেছে, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক একটি রোহিঙ্গা হুন্ডি চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রবাসীদের পাঠানো টাকা লেনদেনের ধারাবাহিকতা চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। ক্যাম্প কমিটির সেক্রেটারি রাকিবুলাহ জানান, উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবির ও সংলগ্ন বস্তির অন্তত ১০ হাজারের অধিক অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। প্রবাস থেকে ব্যাংক চ্যানেলের মাধ্যমে নিকটত্মীয়দের নিকট টাকা পাঠানোর বিষয়টি ঝামেলা মনে করে প্রবাসী রোহিঙ্গারা। তারা লেনদেনের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য সরাসরি হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে থাকে। সূত্রমতে, ১০/১২ জনের একটি রোহিঙ্গা সিন্ডিকেট হুন্ডি ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত। ইতিপূর্বে তাদের অনৈতিক ও রাষ্ট্রদ্রোহীতার মত জঘন্য অপতৎপরতায় বাধা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা নাজমুল হক (৬৬)।
সুত্র মতে,স্থানীয়ভাবে প্রায় অর্ধ শতাধিক তালিকাভুক্ত হুন্ডি চক্র আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে নিয়মিত হুন্ডির টাকা বিতরণ করছে। উখিয়ার ইনানী, সোনারপাড়া, কোর্টবাজার, মরিচ্যা, পাগলির বিল, ভালুকিয়া, উখিয়া সদর, কুতুপালং, টাইপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী সহ একাধিক স্পটে এসব হুন্ডি ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে লেনদেন করে থাকে। চক্রটি শুধুমাত্র একটি মোবাইল নাম্বারের উপর ভিত্তি করে অভিনব কায়দায় হুন্ডির টাকা লেনদেন অব্যাহত রাখায় বিষয়টি আলোচনার বাইরে থেকে যায়। ইদানিং জনপ্রিয় মোবাইল সেবা বিকাশের মাধ্যমেও হুন্ডির লেনদেন আশংকাজনক ভাবে বেড়েছে। বিকাশের মাধ্যমে মোবাইল নাম্বারে হুন্ডির টাকা পৌঁছে দিচ্ছে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। মোবাইল ভিক্তিক ব্যবসা বেড়ে যাওয়ায় চিন্থিত হুন্ডি ব্যবসায়ীরা ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। বিশেষ করে কোটবাজারের মনজুর,একরাম,সোনারপাড়ার আলমসহ চিন্থিত হুন্ডি ব্যবসায়ীরা ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা লেনদেন করে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে উখিয়ার এক হুন্ডি ব্যবসায়ী জানান, উখিয়ার ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা সরবরাহ দিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার আসাদ কমপ্লেক্সের চিন্থিত হুন্ডি এজেন্ট সাইফুল এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফুল ইসলাম। এ সাইফুল ইসলাম নিব্রিঘেœ হুন্ডি ব্যবসা চাালিয়ে যেতে কক্সবাজার থানাকে মাসে লাখ টাকা দিয়ে যাচ্ছে বলে ঐ ব্যবসায়ী জানান।পুবালী ব্যাংক উখিয়া শাখার ম্যানেজার ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, বর্তমানে সহজ পন্থায় প্রেরকের পাঠানো টাকায় তাৎক্ষণিকভাবে প্রাপকের হাতে তুলে দেওয়ার নিশ্চয়তা থাকলেও হুন্ডি চক্রের কারণে ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন লক্ষ্যমাত্রায় অর্জন হচ্ছে না। এ ব্যাংক কর্মকর্তা এজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনদের দোষারোপ করে বলেন, পুলিশ তৎপর হলে হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। সরকার লাভবান হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ হাবিবুর রহমান জানান, তথ্যভিত্তিক অভিযোগ না পাওয়ার কারণে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের ধরা যাচ্ছেনা।