সরওয়ার আলম শাহীন,উখিয়া ::
উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে চোরাচালান অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। ঈদকে সামনে রেখে বানের শ্রোতের মত পাচার হচ্ছে বিভিন্ন আইটেমের ভোগ্যপণ্য। বিনিময়ে মিয়ানমার থেকে আসছে মরণ নেশা ইয়াবা সহ বোতলজাত মাদক দ্রব্য। বিজিবি সদস্যরা গত ৬ মাসে ৬০ কোটি টাকার মূল্যের ইয়াবা ও কোটি টাকার মূল্যের ভোগ্যপণ্য উদ্ধার করলেও পাচার থেমে নেই। সীমান্তের ৫৪ কিলোমিটার নৌপথে বিজিবির চেকপোষ্ট না থাকার সুযোগে নাফ নদীকে চোরাচালানীরা মাদক ও ভোগ্যপণ্য আনা নেয়ার টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে।
সুত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী নাসাকা বাহিনী বিজিপির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতায় টেকনাফ সীমান্তের লেদা, নাজির পাড়া, নয়াপাড়া ঘাট, জাদিমুরা, নাইত্যং পাড়া, জালিয়া পাড়া, ঘোলার পাড়া, মৌলভী পাড়া, সাবরাং ইউনিয়নের ওয়াবদা, ঝিনা পাড়া, উখিয়া উপজেলার বালুখালী পানবাজার,দরগাবিল,ডেইলপাড়া, থাইংখালী, আঞ্জুমান পাড়া, ফারির বিল, কাটা পাহাড়, পালংখালী, নলবনিয়া, ধামনখালী সহ প্রায় অর্ধশত পয়েন্ট দিয়ে দৈনিক কোটি টাকার ইয়াবা ও হুইক্সি, ড্রাইজিং, রাম, বিয়ার, প্রভৃতি বোতলজাত মাদক ঢুকছে।
জানা গেছে, সীমান্তের ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীর জলপথে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির কোনচেক পোষ্ট না থাকার কারনে চোরাচালানীরা মাদক ও ভোগ্যপণ্য আনা নেয়ার নিরাপদ রোড হিসেবে ব্যবহার করে দৈনিক কোটি টাকার চোরাই পণ্য আসছে আর যাচ্ছে। বালুখালী বিজিবির সুবেদার মোহাম্মদ মুছা জানান, চোরাচালানীরা বোতলজাত মাদকের কাটুন অভিনব কায়দায় পায়ে বেধে পানিতে ডুবিয়ে নাফ নদী পারাপার করছে। তাছাড়া এখানকার পাড়া মহল্লায় খুচরা বিক্রির অজুহাতে চাঁদের গাড়ী ভর্তি ভোগ্য পণ্য পাচার করে দিচ্ছে। গত ১ মাসে পালংখালী, বালুখালী ও মরিচ্যা বিজিবির সদস্যরা যানবাহন তল্লাশি চালিয়ে ও সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে কোটি টাকা মূল্যের ভোজ্য তৈল, চাল, ডাল, চিনি, ছোলা সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী উদ্ধার করেছে।
সম্প্রতি এ উপজেলার মাসিক আইনশৃংখলা ও চোরাচালান কমিটির সভায় বিজিবি সদস্যরা সীমান্ত দিয়ে অভিনব কায়দায় ভোজ্য তৈল ও চাল পাচার হওয়ার বিষয় নিয়ে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ব্যবসায়ী নামধারী কতিপয় চোরাচালানী স্থানীয়ভাবে বাজারজাত করার অজুহাতে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২শ মেট্রিক টন ভোজ্য তৈল এনে মজুদ করছে। পরে এসব তৈল চাদের গাড়ী যোগে চোরচালানীর হাত বেয়ে ওপারে চলে যাচ্ছে। তিনি তৈল আনার উপর কড়াকড়ি আরোপ করার জন্য সভার দৃষ্টি আর্কষন করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো মাঈন উদ্দিন বলেন, স্থানীয় চাহিদা অনুপাতে ভোজ্য তৈল আনার ব্যাপারে সুনির্দ্বিষ্ট কয়েকজন ব্যবসায়ীকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। হাতে নাতে তৈল পাচারের সাথে জড়িত অভিযোগ পাওয়া গেলে ওই ব্যবসায়ী ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে। টেকনাফ ৪২ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আবু জার আল জাহির বলেন, নাফ নদীতে চেক পোষ্ট করার পরিবেশ না থাকায় শাহপরীরদ্বীপ ঘোলা পাড়া ও উনচিপ্রাং নাফ নদীর মোহনায় দুইটি অবজারবেশন টাওয়ার বসানো হয়েছে। এখান থেকে চোরাচালানীদের পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মিয়ানমারে জাতিগত দাঙ্গার পর থেকে ইয়াবা পাচার কমেছে।