শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর::
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও বাজারে অবস্থিত মডেল হাসপাতালে এক প্রসূতীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে রোগীর স্বজনরা। এ ঘটনায় তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়াও চালাচ্ছেন। জানা যায়, পার্বত্য উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী বটতলী বাজার সংলগ্ন করলিয়া মুরা এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী আয়েশা আক্তারের প্রসব বেদনা হলে দ্রুত মডেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। সকাল ৯টার দিকে ঐ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসা চলছিল। রোগীর তীব্র প্রসব বেদনা হলে দ্রুত সিজার করার পরামর্শ দিলে স্বজনরা অর্থ যোগাড় করে জমা দেওয়ার আগ মুহুর্তেই উক্ত প্রসূতী আয়েশা বেগম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আয়েশা বেগমের স্বামী মিজানুর রহমান অভিযোগ করে জানান, ঐদিন স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে যাই। দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসা করার পর একটু সুস্থ হলে বিভিন্ন প্রকার খাদ্য দ্রব্য ও সেবন করে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সিজার করার জন্য টাকা যোগাড় করে আনার আগ মুহুর্তে বিকাল ২টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে সে মারা যায়। তিনি আরো জানান, অপারেশন থিয়েটারে ২ জন নার্স কর্তব্যরত ছিল। এসময় ডাক্তার আসার পূর্বেই রোগী মারা যায়। ঘটনার দিন সামাজিকভাবে তার মৃতদেহ দাফন সম্পন্ন করে। এ ব্যাপারে হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ মিন্টুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ শুনেছেন বলে জানান। অপরদিকে রিসিপসন ম্যানেজারের সাথে তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে যুক্তি দিয়ে বলেন, সে রকম রোগী এ হাসপাতালে সিজারের জন্য আসেনি। বরং মেডিকেল চেকআপের জন্য আসছিল। টয়লেট থেকে এসে বাইরের চেয়ারে বসার সময় সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় বলেও জানান। উল্লেখ্য, উক্ত হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই বলে জানা গেছে। তাছাড়া একাধিকবার এরকম মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে স্থানীয় ও বিভিন্ন পত্রিকায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরিমানা করেছে বলেও জানা যায়। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাতারাতি নাম পাল্টিয়ে ডায়াবেটিস হাসপাতাল থেকে মডেল হাসপাতালে রূপান্তর করে। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, বৃহত্তর ঈদগাঁও বাজারে ব্যাঙের ছাতার মত গজে উঠা হাসপাতালের নামে ক্লিনিক গুলোতে অদক্ষ, অযোগ্য ব্যক্তি দিয়ে চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা। কিছুদিন পূর্বেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় অন্য একটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন জরিমানাও করেছিল। তারা জরুরী ভিত্তিতে এসব ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবী জানান সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি। এসব বিষয়ে কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডাঃ পচনুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।