রংপুর: ঈদের লম্বা ছুটিতে বিয়ের হিড়িক পড়েছে রংপুরের পীরগঞ্জে। এরই মধ্যে এখানে সম্পন্ন হয়েছে শতাধিক বিয়ে। ফলে নিকাহ রেজিস্ট্রারদের কাটছে ব্যস্ত সময়। পাশাপাশি কদর বেড়েছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের। সবমিলে বিয়ে সাদির মধ্যেই পীরগঞ্জে ঈদ উদযাপন করছে অনেক পরিবার।
নিকাহ রেজিস্ট্রার ও সংশ্লিষ্ট পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলায় ১৫টি ইউনিয়নে ৩শ ৩১টির মধ্যে প্রায় ৮০টি গ্রামে ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে চলছে বিয়ের আয়োজন। কোনো কোনো গ্রামে একদিনে একাধিক বিয়েও সম্পন্ন হচ্ছে।
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে এক মাসের মধ্যে কোনো প্রকার বিয়ে সাদির আয়োজন করা হয়নি। রমজানে বর ও কনে পক্ষের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পাকাপোক্ত করা হয়েছে বিয়ের দিন-ক্ষণ। আর ঈদের দীর্ঘ ছুটিকেই বেছে নেয়া হয়েছে বিয়ের আয়োজন ও অনুষ্ঠান পালন করতে।
এদিকে, বিয়ের কারণে চাহিদা বেড়েছে কার, মাইক্রোবাস আর মিনিবাসের। এতে তৈরি হয়েছে সঙ্কটও। অতিরিক্ত টাকাতেও মিলছে না প্রয়োজনীয় যানবাহন। ফলে একই পরিবহন একাধিকবার বিয়ে বাড়িতে ভাড়া দেয়া হচ্ছে। আর নিকাহ রেজিস্ট্রাদেরও বিরতিহীন সময় কাটছে। বেড়েছে বিয়ে পড়ানোর হাদিয়ার চাহিদাও।
মদনখালী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্টার নজরুল ইসলাম বাংলামেইলকে বলেন, এতো বিয়ের কারণে আমরা সময়ই পাচ্ছি না। এবারে ঈদের লম্বা ছুটিতে অনেকেই বাইরে থেকে এসেছেন। তাদের অনেকেই বিয়ে করছেন।
একই উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের খেতাবেরপাড়া গ্রামের সাজু মিয়ার ছেলে তরিকুল ইসলাম ঢাকায় চাকরি করেন। ঈদের দিন তার গায়ে হলুদ হয়েছে। ঈদের পরদিন ভেণ্ডাবাড়ী ইউনিয়নের ভীমশহর গ্রামের মামুনুর রশিদের মেয়ে সুবর্ণা আকতার মৌসুমীর সঙ্গে তার বিয়ে সম্পন্ন হয়।
তরিকুল আর মৌসুমীর বিয়েতে এসেছিলেন ঢাকার মিরপুর ক্যাডেট কোচিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আকমল হোসেন। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে ৯টি বিয়ের দাওয়াত পেয়েছি। অধিকাংশ বিয়ের কার্ডে ঈদের পরদিন থেকে বিয়ে-বৌভাতের তারিখ রয়েছে। কারো মন রক্ষা করতে পারছি না। বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যদের ভাগাভাগি করে দাওয়াতে পাঠাচ্ছি। এ ছাড়াও আকিকারও দাওয়াত পেয়েছি ৪টি।
এদিকে, ঈদের লম্বা ছুটি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শেষ হলেও আজ (৯ জুলাই) শেষ হলেও বিয়ে সাদির আয়োজন চলবে আরো কয়েকদিন। তারা এটাকেই ঈদ আনন্দের অংশ মনে করছেন।