উখিয়া হাই স্কুল মাঠে মাস ব্যাপী কুটির শিল্প ও বাণিজ্য মেলা শুরু থেকে বেশ জমে উঠেছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া। হাজার হাজার এনজিওকর্মী। উখিয়াতে বিনোদনের কিছুই নেই। তাই তো এনজিওকর্মীরা ছুটে যান কক্সবাজারে। গ্রাম্য নারী-পুরুষ বিনোদন থেকে বঞ্চিত। এ কারণেই মেলায় আসেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। মেলায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে একটু ভাটা নেই। নানান কৌশলে রোহিঙ্গাদেরও মেলায় আসতে দেখা যায়। সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে মেলার আনন্দ। আনন্দ জোয়ারে ভাসছে মেলাপ্রাঙ্গণ। মেলা পরিদর্শনে আসা কামরুল তানিয়া বলেন, বিকেল বেলা থেকে এনজিওকর্মীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ শেষ করে মেলায় আসতে থাকে। বিশেষ করে ছুটির দিনে অফিস ও কাজের চাপ না থাকায় অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে চলে আসেন মেলায়। উখিয়া সদর ও তার আশপাশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। নানা বয়সি আর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে ওঠেছে পুরো মেলাপ্রাঙ্গণ। ক্রেতাদের ভিড়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে, স্টলে দায়িত্বরতদের। মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, কেউ কেউ প্রিয়জনকে নিয়ে এসেছেন মেলায়। আবার অনেকেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেলাপ্রাঙ্গণে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেলফি তুলছেন, পণ্য কিনতে ভিড় করছেন বিভিন্ন স্টলে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জিয়াউল হাসান হ্নীলা থেকে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, মেলাপ্রাঙ্গণটি অনেক সুন্দর করে তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে জুলাই কর্ণার দেশ প্রেমকে স্বরণ করিয়ে দেয়। জুলাই বিপ্লবে আমরা আমাদের সন্তান আবু সাঈদ ও মুগ্ধদের হারিয়েছি। এখানে মেলা কর্তৃপক্ষ তাদের স্বরণে রেখেছেন। এটি আমার অত্যন্ত ভালো লেগেছে। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেলাপ্রাঙ্গণে ঘুরে ছবি তুলেছি, কিছু কেনাকাচাও করেছি। সব মিলিয়ে ভালোই লেগেছে। উখিয়ার পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে আসা সাঈদুল বশর বলেন, কক্সবাজার বাণিজ্য মেলায় যাব যাব করে আর যাওয়া হয় নাই। আজ সময় পেয়েছি তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি। রোহিঙ্গা তরুণ ইয়াছিন তার বন্ধু কাদের হোসেন বলেন, আমাদের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিনোদনের কিছুই নেই। সারাদিন-রাত ক্যাম্পে ভালো লাগে না। তাই বন্ধুকে নিয়ে মেলা দেখতে এসেছি। যেখানেই ফুটবল খেলা বা মেলা হবে আমরা দুই বন্ধু সেখানেই চলে যায়। একটু আনন্দ পেতে। এখানে মেলা হওয়াতে আমাদের রোহিঙ্গার জন্যও একটু সুবিধা হয়েছে। তারা বলেন আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকি, সেখান থেকে এখানে আসতে তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি। কক্সবাজার যেতে আমাদের কষ্ট হয়। কিন্তু এখানে মেলা হওয়ায় এলাকার লোকজনের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্যেও আসতে সুবিধা হয়েছে। শাকুর মাহমুদ বলেন, সামনের দিনগুলোতে আরও জমে উঠবে এমনটাই মনে হচ্ছে।