উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯/০৮/২০২৩ ৯:৪২ পিএম

শাহেদ হোছাইন মুবিন ;
সুউচ্চ পাহাড় আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্যের আরেক নাম উখিয়ার জালিয়াপালংয়ে সংরক্ষিত বনভূমির তিন একর ভূমিতে গড়ে উঠা জুম ক্ষেত। পাহাড় আর জুম ক্ষেতের নৈসর্গিক দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়। যা স্থানীয়দের কাছে গরীবের সুইজারল্যান্ড নামে পরিচিত লাভ করেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জালিয়াপালং ১নং ওয়ার্ডের জুম্মাপাড়া এলাকায় পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে গড়ে উঠা জুম ক্ষেত দেখতে দলবল নিয়ে ছুঁটছে স্থানীয় সহ বিভিন্ন এলাকার তরুণ তরুণীরা। পাহাড়ের সবুজায়ন, তার মাঝে জুম চাষ যেনো হাতছানি দিচ্ছে ভ্রমণপিপাসুদের।

মঙ্গলবার(২২ আগস্ট ২০২৩) বিকেলে কথা হয় ঘুরতে আসা বেশ কয়েকজনের সাথে। তাদের কাছে জানতে চাইলে, প্রকৃতির মনোরম দৃশ্য আরও অনেক বেশি আনন্দ দিচ্ছে বলে জানায়। সবচেয়ে বেশি সৌন্দর্য্যের স্থান হিসেবে ঐ এলাকার জুম ক্ষেতকে বেঁছে নিয়েছেন তারা। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যে মুগ্ধতা তাদের যেনো বার বার কাছে টেনে নিচ্ছে এমন অনুভূতি ব্যক্ত করেন তারা।

মরিচ্যা থেকে বেড়াতে আসা খান মাহমুদ জানান, আমরা এক দল বন্ধু অটোরিকশা নিয়ে অপরূপ জুম ক্ষেত দেখতে এসেছি। পাহাড়ি পথ মাড়ানোর কোনো অভ্যাস আমাদের নেই। তবুও মনের প্রশান্তি নিতে ঝুঁকি নিয়ে এখানে ছুটে এসেছি।

Play

Unmute
Remaining Time -1:36

Auto(360pLQ)
Fullscreen
পালংখালী এলাকা থেকে জুম ক্ষেতে ঘুরতে আসা আবির বলেন, আসার সময় যত কষ্ট পেয়েছি। এখানে আসার পর সব ভুলে গেছি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, বিশ্রামাগার এবং কয়েকটি খাবারের দোকান থাকলে এই এলাকাটি নতুন পর্যটন নগরী হিসেবে আলাদা সুখ্যাতি অর্জন করবে।

চট্টগ্রামের ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারে আছি। কিন্তু এত সুন্দর এলাকা রয়েছে তা আগে জানতাম না। আমার মনে হয় দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম জুম্মাপাড়া এলাকায় পাহাড়ি এ জুম ক্ষেত ।

জানা যায়, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন ইনানী রেঞ্জের জালিয়াপালং বিটের জুম্মাপাড়া এলাকায় তিন একর সংরক্ষিত বনভূমিতে পাহাড়ী জুম চাষ করে স্থানীয় কয়েকজন কৃষক। বৃষ্টির দিনে প্রকৃতির সবুজ রূপে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি টিলায় গড়ে উঠা জুম ক্ষেত এখন গরীবের সুইজারল্যান্ড নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। দলে দলে প্রতিদিন ছুঁটছে বিভিন্ন প্রান্তের তরুণ-তরুণীরা।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের ছবি পোস্ট করে আনন্দ অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।এসবের মধ্যে লক্ষ্য করে দেখা যায়, রনি নামের এক যুবক তার ফেইসবুক ওয়ালে ছবি গুলো দিয়ে লিখেছেন গরীবের সুইজারল্যান্ড।

উখিয়া থেকে জুম ক্ষেত দেখতে আসা আলমগীর খানও তাঁর ফেইসবুক ওয়ালে জুম ক্ষেতের ছবি দিয়ে লিখেছেন মনের প্রশান্তির খুঁজে প্রকৃতির মাঝে। ৬ বন্ধু নিয়ে ঘুরতে আসা শাহরিয়ার হোসেন আকাশ লিখেছেন হেপি ফ্রাইডে, মরিচ্যা থেকে ঘুরতে আসা সানভীর রহমান সোহেল তাঁর ফেইসবুক ওয়ালে
লিখেছেন সবুজের সমারোহ জুম্মা পাড়া, ৫ বন্ধু নিয়ে ঘুরতে আসা ইমরান জেবি তাঁর ফেইসবুক ওয়ালে লিখেছেন গরীবের সুইজারল্যান্ড, মরিচ্যা থেকে ঘুরতে আসা জিফার মাহমুদ তাঁর ফেইসবুক ওয়ালে লিখেছেন আওয়ার সুইজারল্যান্ড এছাড়াও শতশত তরুণ তরুণী এভাবে তাঁদের ফেইসবুক ওয়ালে নিজেদের মতো করে লিখেছেন।

ইতিমধ্যে অনেকের কাছে জুম্মা পাড়ার জুম ক্ষেতটি গরিবের সুইজারল্যান্ড নামে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। প্রতিদিনই এই গরিবের সুইজারল্যান্ডে দুর-দূরান্ত থেকে এসে স্থানীয় ও পযর্টকরা ভিড় জমাচ্ছে। নিরিবিলি পরিবেশে মুক্ত বাতাস যেন পর্যটকদের মন জুড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে ঘিঞ্জি শহরে ব্যস্তময় জীবনে বেড়ে উঠা অনেকেই শান্তির নীড় খুঁজে বেরিয়ে পড়ে ‘গরিবের সুইজারল্যান্ড’ ভ্রমণে আসছেন। তারা বলছেন নির্ভেজাল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে নিজেকে মেলে ধরতে চাইলে ‘গরিবের সুইজারল্যান্ডের কোন বিকল্প নেই।

তবে গরীবের সুইজারল্যান্ডের রূপ ততদিন মুগ্ধ করবে যতদিন বৃষ্টি বাদলের দিন থাকবে। শুষ্ক মৌসুমে মনোরম দৃশ্য পাল্টে খানিকটা অন্যরূপ ধারণ করে।

পাঠকের মতামত