হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ১৪/১২/২০২২ ৩:৩০ পিএম

বায়তুশ শরফ শাহ কুতুববিয়া আদর্শ ইবতেদায়ী মাদ্রাসা। ২০১৭ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার ৬ বছর পার হতে চললেও অদ্যবধি এমপিওভূক্ত হয়নি। কোন প্রকার সরকারি অনুদান এই মাদ্রাসার জন্যে বরাদ্ধ পায়নি। প্রতিষ্ঠার সময় তৈরি করা টিনের ঘরেই এখনও চলছে কোমলমতি শিক্ষাথীদের ক্লাস। ৬ বছরেও মেলেনি একটি পাকা ভবন। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ক্লাস করছেন দুইশ শিক্ষার্থী। শুধুই তাই নয়, অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ায় প্রযুক্তিগত আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে হলদিয়া পালং ইউনিয়নের কুতুবাবাদ (হাতির ঘোনা)এলাকার এই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ২০২০ সালের ২২ ই জানুয়ারী বায়তুশ শরফ শাহ কুতুবিয়া আদর্শ মাদ্রাসার ভবন ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন, বাহারুল উলুম শাহ সুফি আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোহাম্মদদ কুতুব উদ্দিন। পীর সাহেব বায়তুশ শরফ ও বায়তুশ শরফ আন্জুমানে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ সভাপতি। বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের অধীনে রয়েছে, বায়তুশ শরফ শাহ জবাবারিয়া নূরানী মাদ্রাসা, শাহ আকতারিয়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, বায়তুশ শরফ হেফজখানা, বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, বায়তুশ শরফ সামাজিক বনায়ন প্রকল্প, বায়তুশ শরফ মৎস্য প্রকল্প, বায়তুশ শরফ কবরস্থান এবং বায়তুশ শরফ শাহ কুতুবিয়া মার্কেট। বায়তুশ শরফ শাহ কুতুবিয়া আদর্শ ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সভাপতি হাজি ফজলুল করিম সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক, মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন বলেন, উখিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার আলো জ্বালাতে বাঁশ ও টিনের ঘেরা এই মাদ্রাসায় জরাজীর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। আকস্মিক ঝড়-বৃষ্টিতে যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে এই মাদ্রাসাটির ঘর। অন্য কোন উপায় না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা। উক্ত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে নার্সারী থেকে ক্লাস ফাইভ পযর্ন্ত ২০০ ছাত্র/ছাত্রী রয়েছে। ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা দিয়ে পাঠদান পরিচালিত হচ্ছে। বায়তুশ শরফের পীর মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন হুজুরের জীবদ্দশায় তারই একান্ত ইচ্ছায় ও এলাকার মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে এই মাদ্রাসার আশপাশে ৩-৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো মাদ্রাসা নেই। বায়তুশ শরফ শাহ জব্বারিয়া নূরানী মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম বলেন, মাদ্রাসার অবকাঠামোগত অবস্থা দেখে ভালো মানের শিক্ষকরা যোগদান করতে চায়না। ভবনগত সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর স্বল্পতা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স এর নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৩ সালে ফলজ ও বনজ বনায়ন প্রকল্প, মৎস্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। দ্বীনি শিক্ষায় এই মাদ্রাসা অসাধারণ অবদান রয়েছে। সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা হাবিবুল্লাহ বলেন, মাদ্রাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার রয়েছে। বাধ্য হয়ে দীর্ঘ দিনের পুরনো ঘরে ক্লাশ নিতে হচ্ছে। মাদ্রাসার জন্যে একটি পাকা ভবন খুবই প্রয়োজন। বায়তুশ শরফ শাহ কুতুবিয়া আদর্শ মাদ্রাসার ছাত্রী মোমেনা আক্তার শিফা, সালমা সোলতানা, সুমাইয়া আক্তার ও তানজিনা আক্তার তানিয়া বলেন, আমাদের বিদ্যালয় ভবন হলে আমাদের অনেক আনন্দ লাগবে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, একটি প্রভাবশালী চক্র বায়তুশ শরফ কবরস্থানের জায়গার উপর লোলুপ দৃষ্টি দিয়েছেন। তারা অবৈধভাবে মানুষের শেষ ঠিকানা কবরস্থানের জায়গা দখল করতে চায়। এহেন ষড়যন্ত্র থেকে সকলে সজাগ রয়েছেন বলে জানান।

পাঠকের মতামত