ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১২/১০/২০২৪ ৯:৩৫ এএম

# সংবাদ সম্মেলনে বিধবা পরিবারের আকুতি

উখিয়ার রাজা পালং ইউনিয়নের তুতুর বিল গ্রামের বিধবা অসহায় মহিলা মোবারেকা বেগমের একমাত্র আশ্রয় স্থল বসতভিটা প্রভাবশালীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের কাছে আকুতি জানিয়েছেন।
উখিয়া প্রেসক্লাবে গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে মোবারেকা বেগম দাবি করেন, জায়গা বন্ধক দেওয়া অলিখিত স্ট্যাম্পকে একই এলাকার নুরল আলম সুকৌশলে বিক্রির চুক্তিপত্র বানিয়ে রাতের আঁধারে ভাড়াটিয়া লোকজন এনে জোরপূর্বক বসতভিটার জায়গা জবরদখল করে নিয়েছেন।
মোবারেকা বেগম বলেন, স্বামী ফরিদ আলম গতবছর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। ৩ জন সন্তান নিয়ে একমাত্র বসত ভিটায় জরাজীর্ণ একটি মাটির ঘরে বসবাস করে আসছি। এই বসত ভিটাটি কুক্ষিখিত করার জন্য লোলুপ দৃষ্টি পড়ে প্রভাবশালীদের। এর ধারাবাহিকতায় গত ২২ /৩/২০২৪ তারিখে গভীর রাতে চিহ্নিত ভাড়াটিয়া লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসজ্জিত হয়ে অনুপ্রবেশ করে ঘেরা টেংরা ভাঙচুর করে বসত ভিটার একটি অংশ জোরপূর্বক দখল করে নেয়। এ সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে হামলাকারীরা মা ও ছেলে ইমরানকে মারধর করে। শুধু তাই নয় বসতভিটা থেকে অন্যত্রে পালিয়ে যাওয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকে। উপায় না দেখে অসহায় পরিবার বাঁচার জন্য জরুরি বিশেষ সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে উখিয়া থানার পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিধবা এই নারী বলেন, কয়েক বছর পূর্বে স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় নুরুল আলমের নিকট হতে জায়গা বন্ধক দিয়ে ৪ লাখ টাকা হাওলাত নেয়া হয়। ওই সময় জায়গা বন্ধক বাবদ অলিখিত নন জুড়িশিয়াল স্ট্যাম্পে দস্তখত নেন তিনি। পরবর্তীতে হাওলাতি টাকা জমা দিয়ে স্ট্যাম্প ফেরত চাইলে গড়িমসি শুরু করে। এক পর্যায়ে আমাদের স্বাক্ষরিত অলিখিত স্ট্যাম্পকে জালিয়াতির মাধ্যমে জায়গা বিক্রির রশিদ বানিয়ে জোপূর্বক জায়গা জবর দখলসহ বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
প্রভাবশালীর কবল থেকে জবরদখল হওয়া একমাত্র বসতভিটাটি উদ্ধার করার জন্য, ভুক্তভোগী পরিবার পুলিশের মহাপরিদর্শক, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছে।

মৃত ফরিদুল আলমের ছেলে উকিল আহমদ বলেন, এই বসতভিটা ছাড়া আমাদের আর কোন জায়গা নেই। এটিই আমাদের শেষ সম্বল। আমাদেরকে ঘর থেকে উচ্ছেদ সহ জোরপূর্বভাবে জায়গাটি জবর দখল করে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। শুধু তাই নই অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা নুরুল আলমকে জায়গা বিক্রি করিনি। অলিখিত স্ট্যাম্পের বিনিময় জায়গা বন্ধক দিয়ে টাকা নিয়েছিলাম এটিই সত্য। বর্তমানে আমরা টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বার বার চেষ্টা করলেও টাকা গ্রহণ করছে না।
বিধবা মোবারেকা বেগম সাংবাদিকদের সামনে কেঁদে কেঁদে বলেন, আমরা জায়গা বিক্রি করিনি। অলিখিত স্ট্যাম্পের বিনিময়ে জায়গা বন্ধক দিয়ে যে টাকা নিয়েছিলাম তা ফেরত দিতে সব সময় প্রস্তুত। কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী প্রভাবশালী নূরুল আলম বসতভিটাটি হাতিয়ে নিতে উক্ত অলিখিত স্ট্যাম্পকে বিক্রি চুক্তির রশিদ পত্র হিসাবে লিখিয়ে নেন। এটি দেখিয়ে আমাদেরকে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য হাকা বকা ও হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। বলতে গেলে আমরা বর্তমানে অসহায় হিসেবে বসবাস করতেছি।

ছেলে ইমরান বলেন, প্রভাবশালীরা আমাদের দরিদ্রতার সুযোগে এক মাত্র পিএফ জায়গার বসত ভিটাটি ভাড়াটিয়া লোকজন এনে জবর দখল শুরু করেছে। আমাদের পরিবারকে উচ্ছেদ করা হলে, খোলা আকাশের নিচে বসবাস করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
হাওলাতি টাকা গ্রহন, জায়গা বন্ধকীর অলিখিত স্ট্যাম্প ফেতর সহ জোরপূর্বক ভাবে জবরদখল করে নেওয়া বসত ভিটা প্রভাবশালীদের কবল থেকে উদ্ধার করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট হস্তক্ষেপ কামনা করেছে অসহায় পরিবার।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত পক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত

নাইক্ষংছড়িতে নাশকতার অভিযোগে মামলা,আটক -৩, এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে ৬৫ জন

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে নাশকতার অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে নাশকতা ...

৮১ রোহিঙ্গা আটক

পার্বত্য জেলার বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার পোয়ামুহুরী সীমান্ত দি‌য়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় ৮১ জন ...