বিশেষ প্রতিনিধি
বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখে গ্রাহক ভোগান্তি তৈরির পাশাপাশি রাষ্ট্রবিরোধী আচরণ ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা করার অভিযোগে বিভিন্ন পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সারাদেশে গ্রেফতার হয়েছেন অনেকেই।
ব্ল্যাক আউট চলার সময় বন্ধ করে দেওয়া হয় ওয়াটসএপ গ্রুপে মেসেজ আদান-প্রদান
ব্ল্যাক আউট কর্মসূচীর নামে দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় উখিয়াতেও বৃহস্পতিবার টানা ৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিলো।
ছোট ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে স্বৈরাচার সরকার আমলে ক্ষমতা দেখানো উখিয়া পল্লীবিদ্যুৎ এর ডিজিএম কায়জার নুর ছিলেন এই সমিতির আওতায় থাকা ৭২ হাজার গ্রাহককে অকারণে উদ্দেশ্যমূলক ভোগান্তিতে ফেলার নেপথ্যে।
ছাত্রলীগ পরিচয়ে ডিজিএম কায়জার দাম্ভিকতা দেখাতেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেক গ্রাহক।
এদিকে গ্রাহকদের তথ্য সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত "পল্লী বিদ্যুৎ, উখিয়া জোনাল অফিস" নামে থাকা ওয়াটসএপ গ্রুপের প্রোফাইল ফটো (আইকন) পরিবর্তন করে লাল বৃত্তের ছবি দেওয়া হয়েছে, চলমান আন্দোলনকে সমর্থন দেওয়ার অংশ হিসেবে।
এই গ্রুপের এডমিন ডিজিএম কায়জার নুর কোনো গ্রাহক যাতে মেসেজ দিতে না পারে সে অপশন অফ করেছেন এবং প্রোফাইল ছবি পরিবর্তন করেছেন আরেক এডমিন উখিয়া জোনাল অফিসের এজিএম (অপারেশন ও ম্যানেজমেন্ট) এ এস এম রুহুল আমিন।
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের, কয়েকজনকে গ্রেফতার এবং ১০ কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করার প্রতিবাদে আরইবির চেয়ারম্যানের অপসারণসহ দুই দফা দাবি জানায় ‘পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন’।
বৃহস্পতিবার তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা দেয় এবং দুই দফা দাবি আদায়ে ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করতে বাধ্য হবে বলেও তারা জানায়।
দফায় দফায় সভা অনুষ্ঠিত হলেও সরকারের সংস্কার উদ্যোগে আরইবি’র প্রত্যক্ষ অসহযোগিতার (সভায় অনুপস্থিত থাকা, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন না করা, পরবর্তীতে বিদ্যমান কাঠামো বহাল রাখার প্রস্তাব, গোপনে আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি) কারণে কমিটি চূড়ান্ত সুপারিশ প্রণয়ন করতে পারেনি। গণস্বাক্ষরসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দাবি উপস্থাপন, গ্রাহক সেবা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রেখে গত মে মাসে ৫ দিন এবং জুলাই মাসে ১০ দিন কর্মবিরতি, আগস্টে লং মার্চ টু আরইবি, ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটামে গণছুটি ঘোষণার পর জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনায় কর্মসূচি প্রত্যাহার, সারা দেশে একযোগে ডিসি অফিস ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন, স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিতকরণের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বরাবর একাধিকবার স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি পালন করা হয়।
এই অবস্থায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের, ১৭ অক্টোবর কয়েকজনকে গ্রেফতার এবং ১০ কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। একটি অহিংস আন্দোলনে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির দায়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণ, সমিতির কর্মকর্তাদের চাকরি অবসানের আদেশ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
অন্যথায় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে দাবি আদায়ে ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ঢাকা অভিমুখে লং মার্চ করতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সেসময় কেন্দ্রের নির্দেশনা আছে জানিয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখলেও বর্তমান অবস্থান নিয়ে জানতে চেয়ে ফোন করলে ডিজিএম উখিয়া কল রিসিভ করেন নি।