দেশের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে ঢাকা থেকে শুরু করে তৃণমূল গ্রামাঞ্চলেও। এবার আর রাজপথ ছাড়বে না বিএনপি। হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনা যতই ঘটুক মাঠে থেকেই মোকাবিলা করবে দলটি। সমমনা বিভিন্ন দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে এবার বদ্ধপরিকর বিএনপি।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বলছে, সহিংসতার চেষ্টা হলে তাৎক্ষণিকভাবে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সোলতান মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সাধারণ মানুষের মাঝে দলের সমর্থন রয়েছে। দেশজুড়ে বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা, মামলা, গ্রেফতার ও সংঘর্ষের মতো ঘটনা বাড়তে থাকলেও যে কোনোভাবে রাজপথেই থাকবে তারা। রাজপথে থেকে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণের দিকনির্দেশনাও দলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।
জেলা-উপজেলার দায়িত্বশীল নেতা ছাড়াও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদেরও চিঠি দিয়ে এসব বিষয়ে দেওয়া হয়েছে কঠোর বার্তা। তাই সকল স্থরের দায়িত্বশীল নেতা-কর্মী আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থেকে সরকার পতন আন্দোলনে শরিক হয়েছে। এটা শুধু বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার আন্দোলন নয়, এই আন্দোলন স্বাধীনতা রক্ষার, জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন।
তারা বলেন, জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্য লাগামহীন বাড়ার কারণে মানুষ আজ দিশেহারা। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে মানুষ জেগে উঠেছে।এখন সবাই চায় এই সরকারের পতন। বিএনপি আন্দোলনে আছে। সরকার ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠলে এ ধরনের হামলা, মামলার আশ্রয় নিতে পারে। এতে বিএনপির নেতাকর্মীরা ভীত নয়। তৃণমূল পর্যায়ে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাঁদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। সরকার দলীয় নেতা-কর্মী ও পুলিশের বাধা পেরিয়েও সমাবেশে নেতাকর্মীররা আসছেন। এখন বিএনপির যে কোন কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ আমাদের আশান্বিত করেছে।
উখিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক বেশ কয়েকজন নেতা জানান, বিগত ১৪ বছরে তৃণমূল পর্যায়ে এমনকি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করা হয়নি। এবারের কর্মসূচিতে সারাদেশে একটি কম্পন সৃষ্টি হয়েছে। দেশের একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের উপজেলা পর্যায়ের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ নামছে। হামলা-মামলার ভয়কে উপেক্ষা করে এসব সমাবেশে সবাই স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন।
আগামী ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজার আসছেন দীর্ঘ সময় ধরে থাকা দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার আগমণে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণ-চাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গির কবির চৌধুরী বলেন, মানুষের জীবন মান উন্নয়নে এই সরকারের বিকল্প নেই।২০৩১ সালে উচ্চ-মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হবে বাংলাদেশ। এই রুপকল্প অনুযায়ী সোনার বাংলার যে অগ্রযাত্রা তা একমাত্র দেশ-রত্ন শেখ হাসিনার মাধ্যমেই সম্ভব। তাই আগামী ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারের স্বরণকালের বৃহত্তম সমাবেশ মানুষ দেখবে। এই সমাবেশকে ঘিরে আমরা সব রকমের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। উখিয়া-টেকনাফের মানুষ প্রধানমন্ত্রীর আগমণের অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।
বিএনপির আন্দোলন ও আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি দেশেই রাজনৈতিক দলগগুলোর মধ্যে দ্বন্ব থাকে। আওয়ামী লীগ স্বাধিনতার বিশ্বাসি ও গণতান্ত্রিক দল। বিএনপির গণতান্ত্রিক পন্থায় সভা-সমাবেশ করার অধিকার আছে। খেটে-খাওয়া মানুষ বলছেন, দেশ অস্থির হলে নিরাপত্তাহীনতা ও ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ জনগণ।