বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ১ দফায় রুপান্তরিত হওয়ায় কক্সবাজারের উখিয়ায় অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে ছাত্র নেতারা বলছেন, আন্দোলনে রাজপথে নেমে এসেছেন জনগণ। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ নেতাদের পাল্টা হুঁশিয়ারি, বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে সরকারের পদত্যাগ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদফা দাবিতে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক, পেশাজীবি, শ্রমিকসহ (শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া) দেশের সর্বস্তরের আমজনতাকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ চলমান আন্দোলনে রয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। সরকারকে মানে মানে সরে যাওয়ার আহবান জানিয়ে উখিয়ার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিদুয়ানুর রহমান, হাশেম সিকদার জিশান,বি, এম ফারুকী রুপ ও জান্নাতুল মাওয়া বলেন, নতুন যুদ্ধে নতুন লড়াই শুর করেছি। মিছিল ও সমাবেশের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই সরকারের দিন শেষ। কোনো কিছুতেই আন্দোলন দমাতে পারবে না। মানে মানে পদত্যাগ করোন। রোববার ৪ আগস্ট দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের সময় শুরু হওয়া উখিয়ার কোটবাজার ছাত্রদের উদ্যোগে গণমিছিল ও সমাবেশে ছাত্রনেতারা এ কথা বলেন। তারা বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের স্বাধীনতার সব অর্জনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের গণতন্ত্র, অর্থনীতি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব কিছুই ধ্বংস করে দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ধ্বংস করেছে দেশের বিচার ব্যবস্থা। বিচারালয়ের ওপর ভর করে মিথ্যা মামলায় আমাদের সাধারণ ছাত্র ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে।। সারা বাংলাদেশে ছাত্ররা জেগেছে। সরকার তারুণ্যকে দমাতে পারবে না। সরকার পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও সেনাবাহিনী দিয়ে দেশের গর্বিত সন্তান ছাত্রদের হত্যা করেছে। এই হত্যাকান্ড থেকে বাদ যায়নি শিশুরাও। অসংখ্য মায়ের বুক খালি করেছে। তাতে কি আন্দোলন বন্ধ করা যাবে? যতই নির্যাতন করো, কারাগারে ঢোকাও আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের অধিকার ফিরিয়ে এনে ঘরে ফিরব। সরকার পদত্যাগ না করলে ফয়সালা হবে কোথায়? এ সময় আমজনতা ও ছাত্ররা বলেন, রাজপথে রাজপথে। উখিয়া উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের উদ্যোগে ৪ আগস্ট দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের সময় কোটবাজারে গণমিছিল বের করা হয়। বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার ছাত্র ও গণমানুষে অংশ নেন। কোটবাজারের উত্তর মাথা থেকে দক্ষিণ মাথা পর্যন্ত গণমিছিল করেন তারা। বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন মিছিলের নেতৃত্বে না থাকলেও আন্দোলনকারিদের পাশে পাশে ছিল সার্বক্ষনিক। এদিকে একই সময়ে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেন উখিয়া সদর একরাম মার্কেটের সামনে।।সেখানে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির কবির চৌধুরী, রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী হুমায়ুন কবির চৌধুরী, রাজাপালং ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিনসহ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পুলিশ সদস্যরা ছিলেন সতর্ক অবস্থায়। এই রিপোর্ট লেখাকালীন সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত কোথাও কোনো বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিদুয়ানুর রহমান ও হাশেম সিকদার জিশান বলেন, তাদের শান্তিপূর্ণ গণমিছিল চলাকালে কোটবাজার পুলিশ বক্স ও ইসলামী ব্যাংকে ইট-পাটকেল ছুড়ে ভাংচুর চালায় ছাত্র নামধারী ছাত্রলীগের একটি অংশ।সাথে সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ মাইকে তাদের প্রতিরোধের ডাক দেয়া হলে হামলাকারিরা পালিয়ে যায়।
হুমায়ুন কবির জুশান
হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া নিউজ ডটকম
পাঠকের মতামত