মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে ব্যবহ্নত মর্টার শেল ও গুলির শব্দ আবারও শুনেছেন কক্সবাজারের উখিয়া পালংখালী সীমান্ত এলাকার মানুষ। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট থেকে শুরু হয়ে এ রিপোর্ট লেখাকালীন সময় সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত থেমে থেমে ভেসে আসে বিকট শব্দ। এতে ঘুমধুম ও পালংখালী ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। জানা যায়, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের সঙ্গে চলছে সংঘর্ষ। ঘুমধুম ও উখিয়ার পালংখালী সীমান্তের ওপারে রাখাইনের বিভিন্ন গ্রামগুলোতে সংঘর্ষ চলছে। সংঘর্ষের প্রভাব পড়ছে ঘুমধুম ও পালংখালী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে। পালংখালী ইউনিয়নের সীমান্ত্ এলাকার গণমাধ্যমকর্মী রফিক মাহমুদ উখিয়া নিউজ ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট থেকে শুরু করে থেমে থেমে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ভারি গোলার শব্দ এপারে শুনা যাচ্ছে। যার কারণে সীমান্ত এলাকায় অযথা না যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ঘুমধুম এলাকার হামিদুল হক বলেন, মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে মিয়ানমারের মর্টার শেলের শব্দ হয়। মিয়ানমার থেকে ৫৬ জন তংচগ্যা ও বড়ুয়া সম্প্রদায়ের লোকজন প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পার হয়ে উখিয়া হিন্দু রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে আশ্রয় নেওয়ার একদিনের মাথায় বহুদিন পর আবার গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকজন। এতে সীমান্তবর্তী বসবাসকারী লোকজন ভয়ের মধ্যে আছেন। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম, গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কিছুদিন বন্ধ থাকার পর পালংখালী সীমান্তের ওপারে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন। তাদের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। একদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী গ্রুপের গোলাগুলির শব্দ অন্যদিকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। আমরা সীমান্তবাসী দুশ্চিন্তাই আছি। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। সামনে ছাত্র-ছাত্রীদের বার্ষিক পরীক্ষা রয়েছে। এরই মধ্যে মিয়ানমার ও ক্যাম্পের গোলাগুলির শব্দে ছাত্র-ছাত্রীদের মনে ভয় কাজ করছে। মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধের মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে ঘুমধুম বাইশফাঁড়ি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে চাকমা ও বড়ুয়া পরিবারের ৫৬ জন সদস্য অনুপ্রবেশ করেছে। তারা বর্তমানে উখিয়ার কুতুপালং হিন্দু রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় প্রশাসনের নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছে। গত এক সপ্তাহ আগে ১২ জন এবং সোমবার (১৮ নভেম্বর) চাকমা পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৪৫ জন অনুপ্রবেশ করে। তাদের কুতুপালং হিন্দু রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় রাখা হয়েছে বলে উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) যারীন তাসনিম উখিয়া নিউজ ডটকমকে জানান। সম্প্রতি পালংখালী নাফ নদে ৫ জন জেলেকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। তাদের মধ্যে এক জনের মরদেহ স্থানীয়দের সহযোগীতায় উখিয়া থানা পুলিশ উদ্ধার করে।