দেশীয় অস্ত্র হাতে তেড়ে এসে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় বসবাসরত স্থানীয়দের উপর চড়াও হওয়া ব্যক্তিটি মোহাম্মদ শাহজালাল প্রকাশ জালাল যিনি ওয়ার্ডবয় হিসেবে সরকারী হাসপাতালটিতে কর্মরত।
জালালের দাবী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রঞ্জনের নির্দেশে তিনি হাসপাতাল সংলগ্ন বিরোধপূর্ণ জমিতে বাশের ঘেরা নির্মাণে যান।
২০২২-২৩ অর্থবছরে স্বাস্থ্যপ্রকৌশল অধিদপ্তর ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারি এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ২৮ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ পায়।
কিন্তু স্বাস্থ্য প্রকৌশলের নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন বলেম, স্থানীয়দের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় সম্ভব হয়নি সীমানা প্রাচীর তৈরি করা, গত জুনেই ফেরত যায় সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ।
এদিকে বিষয়টি আলোচনার অংশ ছিলো জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায়, যেখানে উঠে আসে বিরোধ নিরসনে টিএস সহ ইউএনও,এসিল্যান্ড বরাবর পত্র দিয়ে ব্যবস্থাগ্রহণের কথা।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসাইন জানান, বারবার বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু সমাধান করা যায়নি। যেহেতু সরকারী প্রতিষ্ঠানটি অরক্ষিত সেটি রক্ষা করা জরুরি বলেও তাগিদ দিয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।
এখন প্রশ্ন উঠছে, জটিলতা শেষ না করে কেনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রধান ডাক্তার রঞ্জন বিরোধে জড়াচ্ছেন স্থানীয়দের সাথে? তবে কি তিনি অনৈতিক উদ্দেশ্যে নিজের অধীনস্থ দিয়ে করাতে চাচ্ছেন জমি দখল?
এদিকে যে জায়গা নিয়ে সমস্যা সেটির খতিয়ান নং-৩৫৭, যার মালিক জনৈক আমির হোসেন গং। মালিকের উত্তরসূরী শিক্ষক মহিবুল্লাহ জানালেন, স্থানীয়দের হামলা করতে সেদিন ডাক্তার রঞ্জনই পাঠিয়েছিলেন জালালকে।
তার মতে হাসপাতাল জনগণের সম্পদ, তবে যারা দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় বাস করছে তাদের চলাচলের পথ বন্ধ করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ অযৌক্তিক।
এছাড়া তিনি বলেন, হাসপাতাল কতৃপক্ষের কাছে কোনো কাগজপত্র নেই দাতা হিসেবে সীমানা প্রাচীরে কোনো আপত্তি নেই তবে সেটি সমাধান না করে কৌশলে ডাক্তার রঞ্জন বরাদ্ধ ফেরত যাওয়ার পরও প্রাচীর নির্মাণের অজুহাত দিচ্ছেন।
এসব প্রশ্নে মুঠোফোনে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রনজন বড়ুয়া রাজনের জানতে চাওয়া হলে তিনি প্রতিবেদককে জাজমেন্টাল হয়ে যাচ্ছেন সশরীরে দেখা করতে বলেন এবং জালাল কে তিনি পাঠাননি বলে দাবী করেন।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাক্তার আসিফ হাওলাদার জানিয়েছেন, অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে পতিত হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিতর্কিত এডহক চুক্তিতে নিয়োগ পান যোগদানের ১২ বছর পর প্রণোদনামূলক বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার হওয়া ডাক্তার রঞ্জন।
যার বিরুদ্ধে হাসপাতালে টেন্ডার কারসাজির মতো অনিয়মের অভিযোগ সকালের কক্সবাজার সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, এছাড়াও ঠিকাদানকর্মীদের বেতন আত্মসাৎ নিয়ে চলমান আছে আদালতে মামলা।
পাঠকের মতামত