রমজানের শেষ মুহুর্তে উখিয়া সদর ও ব্যস্ততম ষ্টেশন কোটবাজারের শপিংমলগুলোতে নারী ও শিশুদের উপচে পড়া ভীল লক্ষ্য করা দেখা গেছে। মুসলিম বিশে^র বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ব্যস্ততা বেড়ে যাচ্ছে। আর মাত্র দিন ০৫ পরেই আসছে মহা খুশির দিন ঈদুল ফিতর। ঈদকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে মুসলিম সমাজের ঘরে ঘরে ছোট-বড় সবার মাঝে মেতে উঠেছে হৈ-হৈ অবস্থা। ঈদে সব শ্রেণির মানুষের কাছে সেমাই, চিনি, নুড়লস ইত্যাদি যেমন, অপরিহার্য তেমনি মেয়েদের শাড়ী, সেলোয়ার কামিছ, থ্রী-পিছ সহ মন কাড়ানো সব রকমারি পোশাক আর ছেলেদের পাঞ্জাবী-পাইজামা, জিন্স পেন্ট, জিন্স শার্ট, টি-শার্ট, স্কীন গেঞ্জি, চায়না গেঞ্জি সহ বিভিন্ন নিত্য নতুন পোশাক তেনি অপরিহার্য একটি বস্তু। তাই উখিয়ার বিভিন্ন ষ্টেশনের শপিংমল ও হকার মার্কেটগুলোতে নারী পুরুষ ও শিশুদের উপচে ভীড় লেগেই আছে। নিজের পছন্দমত জামা-কপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত বেশির ভাগ নারীরায়। তবে শিশুদের চাহিদা রয়েছে বেশি। ছেলেদের মধ্যে বেশির ভাগ চাহিদা রয়েছে পাঞ্জাবী-পাইজামা, জিন্স প্যান্ট এবং টি-শার্ট। গতকাল উপজেলার ব্যস্ততম ষ্টেশন কোটবাজার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চৌধুরী মার্কেট, চৌধুরী টাওয়ার, হাকিম ট্রেডার্স, ফজল মার্কেট, তোফাইল ফাতেমা শপিং কমপ্লেক্স এন আলম শপিং কমপ্লেক্স, নারী ও শিশুদের পদচারণায় মুখরিত। এদিকে উপজেলার পালংখালী, থাইংখালী, বালুখালী, কুতুপালং, উখিয়া সদর, মরিচ্যা বাজার, সোনার পাড়া সহ বিভিন্ন বাজারে একই অবস্থা বিরাজ করছে। তবে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৪টিরই সংযোগস্থল হওয়ার কারণে কোটবাজারের মার্কেটগুলো জমজমাট ভাবে জমে উঠেছে। এদিকে সরকারী ও বেসরকারী ছুটির দিনের পূর্বে বাড়ি ফেরাত আগে ভাগে অনেকেই নিজের কর্মস্থল থেকে কেনাকাটা করে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই মার্কেটগুলোতে আরও বেশি ভীড় জমে আছে। তাছাড়াও প্রবাসীদের পাঠানো টাকা তুলতে ব্যাংকগুলোতে লেগে আছে লম্বা লম্বা লাইন। যেন লাইনে দাঁড়িয়ে নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অপেক্ষা করছে নারী ও পুরুষ।
কোটবাজারের মার্কেট, শপিংমল, টেইলাস্, পাইকারী ও খুচরা দোকানগুলোতে স্তরে স্তরে সাজানো আছে পুরুষ-মহিলা, ছেলে-মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের মন কাড়ানো, হৃদয় জুড়ানো রকমারী কাপড়। এবারের ঈদে সব ছেয়ে বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে ইন্ডিয়ান বাজীরাও মাস্তানী চলচিত্রের অভিনেত্রী দীপিকা পাড়–কনের পরিহিত বাজিরাও মস্তানা, কিথা, থাই, বাহুবলী, লেহেঙ্গা, পাকিস্তানী ও ইন্ডিয়ান থ্রী-পিচ, ললিপপ শাড়ি, পক পক, জলক, কিরণ মালা শাড়ি, এনি টাইম শাড়ি, বলি শাড়ি, ওয়ান পিছ, ফোর পিছ, চারারা থ্রী পিছ, শিশুদের মধ্যে রয়েছে সারা রাত, শাহরা, তোমায় আমায় মিলে, তুমি দাড়াও আমি আসি, মুদি। এবারের ঈদের মেয়ের জন্য ভিন্ন চরিত্রের একটি থ্রী-পিছ হচ্ছে বিন্নী, বুটিকস। কোটবাজার চৌধুরী টাওয়ারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এস এম ফেবিক্সের সত্বাধিকারী মনিরুল ইসলাম রিয়াদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এবারের ঈদে ভাল ও উন্নতমানের এবং ক্রেতাদের চাহিদা মত কাপড় সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছি। ক্রেতাদের চাহিদাও রয়েছে ভাল। টেকনাফের হ্নীলা এলাকার সালমা নামের এক ক্রেতার জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কোটবাজার-টেকনাফের চেয়ে কেনাকাটা জন্য অনেক সুবিধা, দামও সীমিত রয়েছে। তাই আমরা কেনাকাটার জন্য কোটবাজারকে পছন্দ করি।
কোটবাজার একটি ব্যস্ততম জনবহুল ষ্টেশন এবং বলতে গেলে দ্বিতীয় কক্সবাজার। কিন্তু এরপরেও প্রশাসনের নজরদারী ও নিরাপত্তা না থাকায় কেনাকাটা করতে আসা বেশির নারীরায় ইভটিজিং ও শালীনতাহানিরমত ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে।
এব্যাপারে উখিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমানের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে উখিয়ার সর্বত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে। তবে গত বছরের মত এবছর আমরা কোটবাজারে এখনও স্পেশাল কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেওয় হয়নি। তবে টহল পুলিশকে নির্দিশ দেওয়া আছে।