এ ঘটনায় পাইকগাছা থানা পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে। মৃতের পরিবার ও থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার চাঁদখালী ইউপির কৃষ্ণনগর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ভগীরত শীল এর বিসিএস কর্মকর্তা সুমন শীল (৩০) কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
অপরদিকে সুমন এর পিসতাতো ভাই সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার গোণডাঙ্গা গ্রামের মৃত রঞ্জন কুমার রায় এর ছেলে নবদ্বীপ কুমার রায় ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চাকরির সুবাদে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন।
এদিকে আত্মীয়তার সুত্র ধরে সুমন তার দাদা নবদ্বীপের ঢাকার বাসায় যাতয়াত করত। এক পর্যায়ে নবদ্বীপের স্ত্রী গীতা রাণী শীলের সাথে সুমনের অবৈধ সর্ম্পক গড়ে উঠে এবং তিন বছর পুর্বে সুমনের সাথে গীতার বিয়ে হয় বলে গীতা দাবি করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সুমনের পরিবারের সদস্যরা গীতার সাথে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্ঠা করেন। এক পর্যায়ে সোমবার সকালে সুমনের বাবা ভগীরত শীল বিষয়টি সমাধানের জন্য ঢাকায় নবদ্বীপের বাসায় গিয়ে দেখেন সেখানে সুমন, গীতা রাণী ও নবদ্বীপ রয়েছে।
এ সময় সুমনের সাথে গীতার বিয়ের নিয়ে ভগীরতের সাথে নবদ্বীপ ও গীতার ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে ভগীরতের উপর তারা চড়াও হলে ভগীরত বাসা থেকে বের হয়ে চলে আসেন। বেলা তিনটার দিকে ভগীরতের সেজ ছেলে শম্ভু মোবাইল ফোনে জানায় যে তার ভাই সুমন এ্যাকসিডেন্ডে মারা গেছে।
সাথে সাথে ভগীরত ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজির পর নবদ্বীপের সাথে কথা হলে নবদ্বীপ জানায়, সুমন মারাত্মক অসুস্থ, তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তখন নবদ্বীপ ও তার স্ত্রী গীতা রাণী ভগীরতকে একটি এ্যাম্বুলেন্সে তুলে নেয় এবং কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা মৃত দেহ নিয়ে পাইকগাছায় আসার উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে রওনা দেয়।
গত মঙ্গলবার সকালে সুমনের মৃত দেহ পাইকগাছা থানায় নিয়ে আসলে থানা পুলিশ মৃত দেহ ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে।
নিহত সুমনের পিতা ভগীরত জানান, তার ভাগ্নে নবদ্বীপ ও তার স্ত্রী গীতার সাথে সুমনের বিষয় নিয়ে ঢাকার বাসায় ঝগড়া হলে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে আসার পর পরিকল্পিতভাবে তারা সুমনকে হত্যা করে।
অপরদিকে গীতা রাণী শীল জানান, সুমনের বাবা বাসা থেকে চলে যাওয়ার পর ঘরের ফ্যানে সুমন গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মারুফ আহম্মদ জানিয়েছেন, সুমনের লাশ পাইকগাছা থানায় নিয়ে আসলে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
মৃত দেহের সাথে ঢাকা থেকে আসা নবদ্বীপ ও গীতা রাণীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক রাখা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারা পুলিশ হেফাজতে ছিল।
ওসি আরো জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল যেহেতু ঢাকার রমনা থানা এলাকায় সে কারনে মামলার বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।