আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শুক্রবার প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে রিটার্নিং অফিসার। প্রতীক পাওয়ার পর পরই প্রার্থীরা মাইকিং শুরু করায় উখিয়ার ৫ ইউনিয়নে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। তবে এ উপজেলায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপি দলীয় একক প্রার্থী মনোনয়ন নিশ্চিত করায়, নির্বাচনী দৌড়ে বড় দু’দলের প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছে বলে ভোটারদের অভিমত।
স্থানীয় নির্বাচনী বিশ্লেষকদের ধারণামতে, এ উপজেলার ১ লক্ষ ১৮ হাজার ভোটার আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জামায়াত কেন্দ্রীক। জামায়াত সমর্থিত নেতাকর্মী ও ভোটাররা প্রকাশ্য কাউকে সমর্থন বা কোন প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্য নির্বাচন না করলেও মূলত তাদের অধিকাংশ ভোট ধানের শীষ প্রতীকে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন সরকারি দল হিসেবে আওয়ামীলীগের একটি বিশাল ভোট ব্যাংক এলাকায় বিদ্যমান রয়েছে। এমতাবস্থায়, বিএনপি, আওয়ামীলীগ ও জামায়াত কেন্দ্রীক ভোটগুলি যদি ভাগাভাগি হয়ে যায়, তাহলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট কোথায় তা নিয়ে চলছে নানা হিসাব নিকাশ। ব্যক্তিগত আন্তরিকতা, আত্মীয়তার বন্ধন বা টাকার জোরে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোটের ময়দানে কতটুকু অগ্রগামী হতে পারে তা দেখার বিষয়। রাজাপালং ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। এ ইউনিয়নে বিএনপির একক প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরীর মেজ ছেলে তারেক মাহমুদ চৌধুরী রাজিব ছাড়া অন্য কোন প্রার্থী না থাকায় এখানে বড় দু’দলের মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্ধীতা হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে ভোটাররা। রতœাপালং ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী নুরুল হুদা। বিএনপির মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল কবির চৌধুরীর গত ৫ বছরের উন্নয়নের জোয়ারে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভেসে যেতে পারে বলে এলাকার ভোটাররা বলে বেড়াচ্ছে। তবে এ ইউনিয়নে বিএনপির একাধিক প্রার্থী থাকলেও আওয়ামীলীগের কোন বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় আওয়ামীলীগ প্রার্থী নুরুল হুদা আপাতত সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বলে ভোটাররা দাবী করছেন।
হলদিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের একক মনোনীত প্রার্থী হিসাবে অধ্যক্ষ শাহ আলম নির্বাচনী মাঠে সরব থাকলেও এ ইউনিয়নে রয়েছে আওয়ামীলীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। সে তুলনায় একক প্রার্থী হিসাবে বিএনপির মনোনীত এস.এম. শামশুল হক নিশ্চিন্তে, নির্দ্বিধায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে। এখানেও আওয়ামীলীগ বিএনপির ভোটযুদ্ধ জমবে বলে মনে করছেন ভোটাররা। জালিয়াপালং ইউনিয়নে বিএনপির একক প্রার্থী হিসাবে সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী তার নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে গেলেও, বিএনপি সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন চৌধুরী আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পক্ষে মাঠে প্রকাশ্য নির্বাচন করায় বিএনপি প্রার্থী কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছেন বলে মনে করছেন ভোটাররা। এ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও একক প্রার্থী এসএম ছৈয়দ আলমের তেমন কোন ক্ষতি করতে পারবে না বলে ভোটারদের দাবী। পালংখালী ইউনিয়নে বিএনপি ও আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী থাকলেও এ ইউনিয়নে বড় দু’দলের মধ্যে রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থী। তথাপিও আওয়ামীলীগের প্রার্থী শাহাদত হোসেন জুয়েল অল্প ভোটের ব্যবধানে উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন এলাকার ভোটাররা।
শুক্রবার সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রার্থীদের সাথে উপজেলা প্রশাসনের মত বিনিময় সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেছেন, ভোট কেন্দ্রে কোন প্রকার প্রভাব বিস্তার, জাল ভোট প্রদান সহ ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।