উখিয়া নিউজ ডটকম::
উখিয়ায় সরকারী অনুমোদন বিহীন ক্লিনিকে চলছে গলাকাটা বাণিজ্য। আর এসব ক্লিনিকে রোগ নির্ণয়ের নামে নানা অযুহাতে প্রতিনিয়ত চলছে রোগীদের পকেট কাটা। এক শ্রেণীর মুনাফা লোভী এসব ক্লিনিকের মালিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে চিকিৎসা সেবার নামে গলাকাটা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।
কোটবাজারের লাইফ কেয়ার ডায়াগনিষ্ট সেন্টার, অরিজিন হাসপাতাল, উখিয়া ষ্টেশনের পপুলার প্যাথলজী, সেঞ্চুরী প্যাথলজী, প্যারিস প্যাথলজী, মরিচ্যা বাজারের সেবা প্যাথলজী ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি ক্লিনিক ও প্যাথলজী রয়েছে। যেগুলোর সরকারী কোন অনুমোদন নেই এবং প্যাথলজী ও ক্লিনিক পরিচালনার কোন নিয়ম-নীতি মানা হচ্ছে না।
রোগ নির্ণয়কেন্দ্র (প্যাথলজী) পরিচালনার জন্য সার্বক্ষণিকভাবে সনদধারী ও প্রশিক্ষিত একজন টেকনিশিয়ান এবং প্রতিবেদন (রিপোর্ট) প্রদানের জন্য একজন এমবিবিএস সনদধারী চিকিৎসক নিয়োজিত থাকার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু উখিয়ার সরকারী অনুমোদন বিহীন এসব ক্লিনিক চলছে টেকনিশিয়ান ও চিকিৎসক ছাড়াই।
এছাড়া প্রয়োজন না হলেও গ্রামের সহজ-সরল রোগীদের কাছ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে পকেটের টাকা। ফলে রোগীদের অনেকে টাকা খরচ করার পরও চিকিৎসা সেবার নামে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে। এছাড়া সনদ বিহীন ও অনভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান দিয়ে রোগ নিরুপন করায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ভুল চিকিৎসার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারী এবং কতিপয় ফার্মেসী মালিক যোগসাজশ করে উখিয়ায় সরকারী অনুমোদন বিহীন এসব ক্লিনিক ও প্যাথলজী গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
উখিয়ার হলদিয়া পালং মরিচ্যা বাজার এলাকার জুহুরা বেগম বলেন, গত ৭/৮ দিন আগে সর্দি-কাশি ও জ্বর হলে আমি মরিচ্যা বাজারের ডাঃ নছরুল্লাহর কাছে চিকিৎসা নিতে যাই। কিন্তু সামান্য রোগ নির্ণয়ের জন্য আমাকে ডায়বেটিস, জন্ডিস, টাইফয়েট সহ ৪টি রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেন। মরিচ্যা বাজারের সেবা প্যাথলজীতে এসবের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক আমাকে শুধু জ্বরের জন্য ওষুধ দেন। আর প্রয়োজন না হলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে আমার কাছ থেকে ৮০০ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।
হলদিয়া পালং গোরাইয়ারদ্বীপ এলাকার জমির উদ্দিন জানান, মরিচ্যা বাজারের চিকিৎসক নামধারী কিছু অসাধু ব্যক্তি ও ফার্মেসী ব্যবসায়ী ‘সেবা প্যাথলজী’ নামের রোগ নির্ণয়কেন্দ্র খুলে চিকিৎসা সেবার অযুহাতে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
অসাধু এ কাজের জন্য হলদিয়াপালং ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তার আব্দুস ছালাম ও উখিয়া সদর হাসপাতালের ষ্টোরকিপার মোহাম্মদ আলী এ প্যাথলজী ব্যবসার সাথে জড়িত বলে তিনি অভিযোগ করেন।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রবিউর রহমান জানান, মরিচ্যা বাজারের সেবা প্যাথলজীর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। একটি প্যাথলজী পরিচালনা করার জন্য সনদধারী একজন টেকনেশিয়ান এবং রিপোর্ট প্রদানের জন্য সার্বক্ষণিক একজন এমবিবিএস সনদধারী চিকিৎসক নিয়োজিত থাকার নিয়ম থাকলেও এ ল্যাবে কোনটিই মানা হচ্ছে না।