প্রকাশিত: ০৯/০১/২০১৭ ৭:৫৭ পিএম

ফারুক আহমদ, উখিয়া::
কক্সবাজারের উখিয়ায় কচিকাঁচা শিক্ষার্থীর মাথা বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কে.জি স্কুল গুলো। অখ্যাত কোম্পানীর বই জোরপূর্বক শিক্ষার্থীদেরকে ক্রয় করতে বাধ্য করা হচ্ছে এমন অভিযোগ সচেতন অভিভাবকের। বিনিময়ে কে.জি স্কুলের শিক্ষকরা পকেটস্থ করেছে কয়েক লক্ষ টাকার উপরে। বই ব্যবসার নামে শিক্ষার্থীদেরকে নি¤œমানের বই ও মাত্রা অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় শত শত অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, উখিয়া উপজেলায় সর্বত্র ও গ্রামেগঞ্জে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে প্রায় ৩৫টির অধিক কে.জি স্কুল। উক্ত স্কুল গুলোতে প্রায় ৬ হাজার মত কচিকাঁচা শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে।

কে.জি স্কুল সূত্রে জানা যায়, উখিয়া কিন্ডার গার্ডেন এসোসিয়েশন ও উখিয়া উপজেলা কে.জি স্কুল এসোসিয়েশন ব্যানারে দু’টি পৃথক সংগঠন রয়েছে। উক্ত সংগঠনের অধিনে এসব গড়ে উঠা কে.জি স্কুল গুলো পরিচালিত হয়ে আসছে।

অভিভাবকগণ জানান, নতুন বছরের শুরুতেই স্ব-স্ব কে.জি স্কুলে ভিন্ন ভিন্ন বইয়ের তালিকা ছাত্রদের হাতে ধরিয়ে দেয়।

অভিযোগে প্রকাশ, ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু অখ্যাত বই কোম্পানীর সাথে উখিয়ার কে.জি স্কুলের কতিপয় শিক্ষক ও লাইব্রেরী যোগসাজস করে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তি অনুযায়ী ওইসব প্রকশনীর বই ছাত্রদেরকে ক্রয় করতে বাধ্য করা সহ চাপ প্রয়োগ করে শিক্ষকরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতি শিক্ষার্থীর মাথা পিছু ২শ ২০ টাকা থেকে ২শ ৫০ টাকা পর্যন্ত বই কোম্পানী বা প্রকাশনী থেকে হাতিয়ে নিয়েছে স্ব-স্ব কে.জি স্কুলের শিক্ষকগণ। একটি কে.জি স্কুলে ২শত শিক্ষার্থী থাকলে মাথা বিক্রি বাবদ অখ্যাত প্রকাশনীর কাছ থেকে আদায় করা হয় ৫০ হাজার টাকা।

এবারের নতুন বছরের যেসব প্রকাশনী শিক্ষার্থীদের মাথা ক্রয় করেছে সেসব প্রতিষ্ঠান গুলো হচ্ছে এ্যাডভান্স পাবলিকেশন, নবারুন পাবলিকেশন, শরীফা প্রকাশনী, হিউম্যান পাবলিকেশন, সংকল্প প্রকাশনী, মেট্রো পালিশ, হাবিব প্রকাশন, পুথি নিলয়, শাহরীন প্রকাশক, দি ওরিয়েন্ট, স্ট্যাডার্ড প্রকাশনী, নেপচুন পাবলিকেশন, মহানগর প্রকাশনী, বিদ্যা প্রকাশন, চট্টগ্রাম, নুর পাবলিকেশন, আরটি পাবলিকেশন, ঢাকা বুক প্লেসসহ অনেক অখ্যাত বই কোম্পানী।

গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, কক্সবাজার শহরের রহমানিয়া লাইব্রেরী ও মোহাম্মদিয়া লাইব্রেরীর মধ্যস্থতায় এসব বই কোম্পানীর সাথে উখিয়ার বিভিন্ন কে.জি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাথা বিক্রির মাধ্যমে বই বিক্রির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। এছাড়াও উখিয়ার হোছাইনিয়া লাইব্রেরী, ফ্রেন্স লাইব্রেরী, কোটবাজারের পালং লাইব্রেরী ও চৌধুরী লাইব্রেরী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে লাইব্রেরীর মালিকগণ জানান, কক্সবাজারের রহমানিয়া লাইব্রেরী ও মোহাম্মদিয়া লাইব্রেরীকে লক্ষ লক্ষ টাকা অগ্রীম জামানত দিয়ে আমাদেরকে কে.জি স্কুলের বই গুলো আনতে হয়েছে।

অভিভাবক আবুল মনসুর চৌধুরী, মোহাম্মদ ফরহাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উক্ত প্রকাশনীর নার্সারীর কিংবা প্লে শ্রেণির একটি ৩০ টাকা দামের বই ১শ ১০ টাকা থেকে ১শ ৫০ টাকা দিয়ে আমাদের সন্তানদের জন্য ক্রয় করতে হয়। বই ব্যবসার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া খুবই দু:খজনক।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার জানান, প্রত্যেক কে.জি স্কুল গুলোতে সরকারী ভাবে সরবরাহকৃত বই বিনামূল্যে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কে.জি স্কুলের বইয়ের নামে শিক্ষার্থীদেরকে অতিরিক্ত বই পাঠদান ও মাত্রা অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়া বিষয়টি সচেতন অভিভাবককে সোচ্ছার হতে হবে।

পাঠকের মতামত

যে কারনে মামলার মুখে পড়তে পারে ইউনিয়ন ব্যাংক

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ‘নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্ট’ এ মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ...